নওগাঁয় ইরি-বোরো ধান লাগাতে ব্যস্ত কৃষকরা
কনকনে শীত উপেক্ষা করে নওগাঁয় আগাম ইরি-বোরো ধান লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, কৃষি উপকরণ সার, তেল বাজারে পর্যাপ্ত থাকায় ইরি-বোরো ধান চাষ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে আত্রাই, মান্দা, নওগাঁ সদর উপজেলার ৩০/৩৫টি গ্রামে ইরি-বোরো ধান লাগানো শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আত্রাইয়ের বিল এলাকা বাঁইকাওলমা, তেজনন্দী, বরভিটা, কান্দলমা, স্থলমা, বিশিয়া, উদয়পুর, ভাঙ্গাডাঙ্গাসহ প্রায় ২০/২৫টি গ্রামে সবচেয়ে বেশি ধান লাগানো শুরু হয়েছে।
বাঁইকাওলমা গ্রামের কৃষক আব্দুস সোবহান জাগো নিউজকে জানান, তাদের এলাকার বিলাঞ্চল হওয়ায় শ্যালো মেশিন দিয়ে আগাম ইরি-বোরো ধান লাগাতে হয়। এছাড়াও আগাম ধান চাষের আরেকটি প্রধান কারণ বর্তমানে আবহাওয়া ভালো রয়েছে। রাতে ও সকালে ঠাণ্ডা হলেও দিনে ভালো রোদ হওয়ায় ধানের চারা জমিতে লাগানো সঙ্গে সঙ্গে ধানের চারা থেকে শিকড় দ্রুত বৃদ্ধি হবে। এতে ধানের চারা মরে যাওয়ার ভয় থাকে না। ধানও ভালো হয়।
একই গ্রামের আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে জানান, বিল এলাকা হওয়ায় ইতোমধ্যে জমি এ এলাকার অধিকাংশ কৃষকদের জমি চাষ করে তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। আবার প্রতিটি গ্রামের দুই/চারজন কৃষক ধান লাগানো শুরু করেছেন।
এছাড়া কান্দলমা গ্রামের কৃষক রাজিব হোসেন জাগো নিউজকে জানান, মাটিতে বন্যার সময় প্রচুর পলি পড়ায় মাটি উর্বর থাকে। এ কারণে জমিতে সারের পরিমাণ অন্য এলাকার চেয়ে কম লাগে। এছাড়াও বর্তমানে সার, তেলের কোনো সঙ্কট নেই।
স্থলমা গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জাগো নিউজকে জানান, যাদের নিজস্ব জমি তাদের এক বিঘা ধান চাষ করে ঘরে তুলতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বর্গা চাষিদের প্রতি বিঘা ৫ থেকে ৬ মণ ধান জমির মালিকদের দিতে হয়। সরকার ধানের দাম দিলে কৃষকদের লাভ হবে।
আত্রাই উপজেলার পাঁচুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক পিন্টু জাগো নিউজকে জানান, এ এলাকায় জিরাশাইল, বিয়ার-২৯, বিয়ার-১১, রাইজা, গুটি স্বর্ণসহ বিভিন্ন জাতের ধান লাগানো হয়। এছাড়া কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়ায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভালো ধান উৎপাদন হবে এমনটাই আশা ব্যক্ত করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সত্যব্রত সাহা জাগো নিউজকে জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান লাগানোর লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও বেশি জমিতে ধান চাষের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। বাজারে ইউরিয়া, ফসফেট, টিএসপি, পটাশসহ সকল প্রকার সার, তেলের পর্যপ্ত সরবরাহ থাকায় ইরি-বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও সংকট থাকবে না বলে তিনি জানান।
আব্বাস আলী/এমজেড/পিআর