যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যু, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক খুলনা
প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

খুলনার রূপসায় নির্যাতনের শিকার হয়ে আসমা খাতুন নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নির্যাতনের ঘটনার পর ৮ সেপ্টেম্বর গৃহবধূ আসমার ভাই রূপসা থানায় বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর আগে কাজদিয়া পাঁচানি গ্রামের আব্দুস সত্তারের ছেলে আসাদুজ্জামান নুরের সঙ্গে বিয়ে হয় আলমগীর গাজীর মেয়ে আসমা খাতুনের। এরপর থেকেই তাকে যৌতুকের টাকার জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরই মধ্যে আসমা ও নুরের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারপরও নির্যাতনের মাত্রা না কমায় পাঁচ মাস আগে তিনি বাবার বাড়ি টুটপাড়ার সরকার পাড়ায় চলে আসেন।

আসমা খাতুনের বাবা আলমগীর গাজী জানান, স্ত্রী ও সন্তানকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে স্থানীয় সাবেক এক নারী মেম্বারের সঙ্গে শ্বশুর বাড়ি আসেন আসাদুজ্জামান নুর। সাবেক ওই মেম্বারের জিম্মায় আসমা খাতুন ও তার সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আসমার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। বুকে একাধিক লাথি ও ঘুষি মারা হয়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে আসমাকে কাজদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মেয়ে মারা যান।

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে আসাদুজ্জামান আমার স্ত্রীকে ফোনে বলেন আমার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। পরে আমরা হাসপাতালে গেলে আসমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পালিয়ে যান। যে মহিলা মেম্বারের জিম্মায় আমার মেয়েকে দিয়েছিলাম তিনিও ফোন বন্ধ রেখেছেন।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রূপসা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহীদ জানান, যৌতুকের কারণে গৃহবধূকে প্রায় নির্যাতন করা হতো। ওই গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার স্বামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ওই গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি তারা জেনেছেন। এখন পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলমগীর হান্নান/এফআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।