ধানের শীষে চিটা ধরাতে মরিয়া বিএনপির একাংশ
বগুড়ার শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষে চিটা ধরাতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা। তারা বিএনপি-মনোনীত মেয়র প্রার্থী পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বর্তমানে শিবগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিনের ধানের শীষ প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন খেজুর গাছ প্রতীক নিয়ে থানা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক এসএম তাজুল ইসলাম।
একই ভাবে নন্দীগ্রাম পৌরসভায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র সুশান্ত কুমার শান্তর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন, দলের সহ-সভাপতি একেএম ফজলুল হক কাশেম ও সাবেক মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল। কিন্তু এই দুটি পৌরসভায় থানা ও পৌর কমিটির নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে তারা বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছেন।
শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি-মনোনীত মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমানকে সমর্থন দিচ্ছেন না স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তাজুল ইসলামের নারকেল গাছ প্রতীকে এককাট্টা হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি কর্মী আল আমিন মোহাম্মদ জানান, মতিন মেয়র থাকাকালে দলীয় নেতাকর্মীদের কোননো সুযোগ-সুবিধা দেয়নি। তার কাছে গেলে নানা তালবাহানা করে ফিরিয়ে দেয়া হতো। এ কারণে এবার অনেকেই তার সঙ্গে নেই।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর শাহে আলমের সঙ্গে সাবেক পৌর কমিটির সভাপতি ও বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমানের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। একে অপরকে তারা রাজনৈতিক শক্র মনে করেন।
বর্তমানে শাহে আলমের অনুসারীরা উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছেন। পৌরসভা নির্বাচনে শাহে আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক বুলবুল ইসলাম মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পান বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমান মতিন। আর এ কারণেই মতিয়ার রহমান মতিনের ধানের শীষ প্রতীকে চিটা ধরাতে তারা উঠে পড়ে লেগেছে।
জানতে চাইলে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক বুলবুল ইসলাম বলেন, মতিয়ার রহমান দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আগে ও পরে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। তাই আমরা তার সঙ্গে যাইনি।
বিদ্রোহী প্রার্থী তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপির মনোনয়নে পক্ষপাত করা হয়েছে। যাকে প্রার্থী করা হয়েছে তিনি সুবিধাবাদী লোক। গত তিন বছরে বিএনপির কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেননি। এমনকি সরকার বিরোধী আন্দোলনে তিনি স্থানীয় এমপির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে গা বাঁচিয়ে চলেছেন। এজন্য তার সঙ্গে দলীয় কোনো নেতাকর্মীর সম্পর্ক পর্যন্ত নেই।
এ বিষয়ে মতিয়ার রহমান মতিন বলেন, শিবগঞ্জের থানা ও পৌর বিএনপির কোনো অনুমোদন নেই। কয়েকজনকে নিয়ে মনগড়া কমিটির করা হয়েছে। গুটিকয়েকজন বাদে পুরো বিএনপি আমার সঙ্গে আছে। যারা বিরোধীতা করছে তারা নগণ্য।
একইভাবে নন্দীগ্রাম পৌরসভায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র সুশান্ত কুমার শান্তর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি একেএম ফজলুল হক কাশেম মোবাইল প্রতীক নিয়ে ও সাবেক মেয়র ছাত্রদল নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল জগ প্রতীক নিয়ে। এ পৌরসভাতেও থানা ও পৌর কমিটির নেতাকর্মীরা বিএনপির প্রার্থীদের পাশে না দাঁড়িয়ে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।
নন্দীগ্রাম থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বলেন, মেয়র প্রার্থী দলের মনোনয়ন লাভের আগে পরে আমাদের ডাকেননি। তিনি একাই নির্বাচন করছেন। তাই দলের নেতাকর্মীরা তার পিছনে নেই।
তবে প্রার্থী সুশান্ত কুমার শান্ত বলেন, বিরোধীতা করে কোনো লাভ নেই। বিএনপি ছোট দল নয়। আমার সঙ্গে হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছে। এজন্য আমি এতে ভীত নই।
এআরএ/পিআর