আপত্তিকর অবস্থায় আটক, ৩০ বছরের যুবকের সঙ্গে ৫৫ বছরের নারীর বিয়ে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আপত্তিকর অবস্থায় আটকের পর ৩০ বছর বয়সী তরুণের সঙ্গে ৫৫ বছর বয়সী এক নারীর বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নে এই বিয়ে হয়।

বড়হিত ইউনিয়নের ৫ নম্বর ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম এই বিয়ের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন। তবে বিস্তারিত জানতে চাইলে এই প্রতিবেদকের পরিচয় জানার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন কেটে দেন।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা জাগো নিউজকে বলেন, ওই তরুণের সঙ্গে বিয়ের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের এক তরুণের সঙ্গে তার দূর সম্পর্কের দাদিকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরে ফেলেন ওই নারীর ছেলে। এরপর এলাকার লোকজনকে ডেকে বিষয়টি তিনি জানান।

পরদিন শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশে বসেন। সেখানে ওই তরুণের সঙ্গে দাদির বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই তরুণ পালিয়ে যান। এমতাবস্থায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ওই নারীকে তরুণের বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন।

এদিকে, একদিন পালিয়ে থাকার পর রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) ওই তরুণ বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে ওইদিন আবারও স্থানীয় গণ্যমান্যরা সালিশে বসে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দাদির সঙ্গে ওই তরুণের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ওই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গতকাল বিকেলে তাদের বিয়ে হয়।

তবে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল আটটার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে বিয়ে করা তরুণ ও নারীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

ওই তরুণের পরিবারের অভিযোগ, এলাকার ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশের মাধ্যমে জোর করে এই বিয়ে দেন। ওই নারী এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না।

এদিকে, ওই তরুণের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য খাইরুল মিয়াকে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আবার একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ওই তরুণের বাবা বলেন, ঘটনার পর তিনটা সালিশ হয়েছে। সালিশে মাতব্বরদের পা পর্যন্ত ধরেছি। তারপরেও আমার অবিবাহিত ছেলেকে ৫৫ বছর বয়সী ওই নারীর সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে দিয়েছে।

ওই তরুণের মা বলেন, সালিশে আমি প্রত্যেকটা মানুষের পায়ে ধরে মাফ চাইছি। কিন্তু কেউ আমার কথা শোনেনি। ওই নারীও আমার ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না, তারপরেও জোর করে বিয়ে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে বিয়ের কাজি নুরুল্লাহকে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ জালাল জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিয়ে হয়েছে কি-না তাও বলতে পারব না। আমি বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া থানায় কেউ এই বিষয়টি অবগত করেনি।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।