আ.লীগের তিন গ্রুপের কর্মসূচি, নোয়াখালীতে ১৪৪ ধারা জারি
নোয়াখালীর মাইজদী, দত্তেরহাট, সোনাপুর এলাকায় সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা আওয়ামী লীগের তিন গ্রুপের পাল্টাপাল্টি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় এ নির্দেশ জারি করা হয়।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
পরে এক চিঠিতে জেলা প্রশাসন জানায়, সোমবার সকাল ১০টায় নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কর্তৃক জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও জনসভা ঘোষণা করেন এবং নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র একই সময়ে পৌরসভার অভ্যন্তরে আলোচনা সভা ও র্যালির কর্মসূচির ডাক দেন। তাই পৌর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। সংসদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নোয়াখালীর রাজনীতির পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে আহ্বায়ক কমিটি করার সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দেওয়া ও নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে এখন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে নানা কর্মসূচি পালন করছেন।
৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর পক্ষে তার অনুসারীরা জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে আওয়ামী লীগ অফিসে সমাবেশের ডাক দেয়।
একই সময় জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশে টাউনহল মোড়ে সাবেক উপজেলা চেয়াম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীনের নেতৃত্বে পাল্টা সমাবশের ডাক দেওয়া হয়। একইস্থানে দুই গ্রুপের কর্মসূচি এবং শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদুল্লাহ খান সোহেল আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল ১০টায় পৌর মিলনায়তনে কর্মী সমাবেশ ও শোভাযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে, রোববার বিকেলে শহরে পৌর মেয়র সোহেল সমর্থকদের সঙ্গে একরাম চৌধুরী গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকেল সাড়ে ৫টা টাউনহল মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে একরাম চৌধুরীর লোকজন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আবদুল মালেক উকিল রোডে অবরোধ করে রাখলে শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, সোমবার সকাল-সন্ধ্যা নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। এ সময়ে নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন গণজমায়েত, সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক যেকোনো কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকবে। একসঙ্গে চারজনের বেশি গণজমায়েত হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ফৌজদারি মামলাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ১৪৪ ধারা জারিকৃত এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কেউ কোনো ধরনের বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/জিকেএস