ঘোড়ার মাংস ভক্ষণ: আসামিদের অব্যাহতি, বাদীকে তিরস্কার
পঞ্চগড়ের বোদায় ঘোড়া জবাই করে মাংস ভক্ষণে অভিযুক্ত মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমান (৩৩) নামের দুই যুবককে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। আদেশে বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস সোবহানকে দ্বায়িত্ব পালতে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমান এ আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ সূত্রে জানা যায়, আসামিরা ঘোড়ার মাংস হালাল মনে করে খাওয়ার জন্য জবাই করেছিলেন। সহিহ বুখারিসহ একাধিক হাদিসে ঘোড়ার মাংস হালাল বলে উল্লেখ আছে। আসামিরা যেহেতু মাংস খাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘোড়া জবাই করেছিলেন, তাই এতে তারা কোনো অন্যায় করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয় না।
মামলার প্রতিবেদনে এ নিয়ে কোনো সদুত্তর না থাকায় আদেশে মামলার বাদী বোদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিপন কুমার বসাক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জাহেদুল ইসলামকে তিরস্কার করেন আদালত।
গত বছরের ২২ ডিসেম্বর বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের চৌধুরীহাটে ঘোড়া জবাই করার অভিযোগে মো. সানাউল্লাহ (৩২) ও হামিদুর রহমান (৩৩) নামের দুই যুবককে আটক করা হয়। এ সময় ৩৫ কেজি ঘোড়ার মাংসও জব্দ করা হয়। জব্দ মাংস থেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে বাকি মাংস বোদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানে উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
পরদিন বোদা থানার এসআই লিপন কুমার বসাক বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আটক দুই যুবককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সাতদিন কারাবাসের পর ২৯ ডিসেম্বর আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। ওইদিনই আদালত ঘোড়ার মাংস হালাল নাকি হারাম তা ব্যাখাপূর্বক বাদীসহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমানকে প্রতিবেদন দিতে বলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চলতি বছরের ৩০ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, ঘোড়ার মাংস রাসায়নিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই ক্ষতিকর মর্মে উল্লেখ করা হয়। এজন্য ভুলের কারণে অভিযুক্তদের অহেতুক সাতদিন কারাবাস করতে হয়েছে, যা দুঃখজনক।।
সফিকুল আলম/এসআর/জিকেএস