তিস্তার পানিতে প্লাবিত লালমনিরহাট-নীলফামারীর ৬৩ চর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ২০ আগস্ট ২০২১

অডিও শুনুন

পাহাড়ি ঢল ও ভারতের গজলডোবার সব গেট খুলে দেওয়ায় তিস্তা ব্যারাজে এখনো বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ কমিয়ে ব্যারেজ রক্ষায় সব কয়টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। পানি বাড়ায় জেলার ৬৩টি চর ও পাঁচটি উপজেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

তিস্তা ব্যারেজের স্বাভাবিক প্রবাহ ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। কিন্তু শুক্রবার সকালে তিস্তা পানির প্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৮০ শতাংশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় তিস্তায় পানির প্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার।

তিস্তা ব্যারাজের পানিবিজ্ঞান শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইলিয়াস আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে আসছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমটিার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজের ৪৪টি গেটের সব কয়টি খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

jagonews24

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার চরাঞ্চলের ১৭টি গ্রাম এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে পাটগ্রামের দহগ্রাম, গড্ডিমারি, সির্ন্দুনা, চর সিন্দুর্না, হলদীবাড়ি, ডাউয়াবাড়ি, ভোটমারি, মহিষখোচা, গোকুণ্ডা, রাজপুর, কুলাঘাট, মোগলহাট এলাকার কয়েকশ পরিবার চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে।

এদিকে, নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদী অবববাহিকার চরের গ্রামগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ডিমলার কিছামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশ পুকুর, ঝুনাগাছ চাঁপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, ভেন্ডাবাড়ি, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।

jagonews24

এছাড়া বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ও হাতীবান্ধার একমাত্র সড়কটি পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হলে এলাকাবাসী বালির বস্তা দিয়ে পাকা সড়কটি রক্ষা করেন।

হাতীবান্ধা উপজেলার সির্ন্দুনা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক পরিবার বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পরিবারগুলো সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চরের বেশকিছু রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বসতবাড়িতেও কোমর পানি। চুলায় রান্না করে খেতে পারছে না। শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিস্কুটের ওপর নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।’

jagonews24

গড্ডিমারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে আমার ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ড বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। একটি পাকা সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে।’

লালমনিরহাট জেলা প্রসাশক আবু জাফর বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে ত্রাণ সহায়তা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।’

মো. রবিউল হাসান/এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।