১০ দিনে তিস্তার পেটে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৮:২৬ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২১

পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে চর এলাকায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। সঙ্গে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

সোমবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়। ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪ গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, হাতীবান্ধা ও আদিতমারী উপজেলায় তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় আমন ধান ও সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ। হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না ও পাটিকাপাড়া এলাকার দুই শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো।

jagonews24

মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে দুটি ইউনিয়নের দুই শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে চর সিন্দুর্না কমিউনিটি ক্লিনিক ও সিন্দুর্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদরাসা।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত চিলমারী গ্রামের লাল মিয়া (৩৫) বলেন, তিস্তা নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে পাঁচ দিনের মধ্যে চিলমারী গ্রামটাই নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

jagonews24

আমজাদ হোসেন (৪০) নামের আরেকজন বলেন, নদীতে সব ভেসে গেছে। পরিবার নিয়ে শুধু বেঁচে আছি। এখন যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তিস্তার ভাঙনে অনেক পরিবার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছে।

হাতীবান্ধা সিন্দুর্না ইউনিয়নের (ইউপি) সদস্য মফিজার রহমান বলেন, গত দুই দিনে সিন্দুর্না ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ৫০ পরিবারে ঘরবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আশ্রয় নিয়েছেন।

jagonews24

পাটিকাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল আলম সাদাত বলেন, এ ইউনিয়নে চার ওয়ার্ডে তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, নদী ভাঙনের ফলে শতশত পরিবার নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চিলমারী গ্রাম প্রায় বিলীনের পথে।

jagonews24

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ পরিবারের বসতবাড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, পানিবন্দি পরিবার গুলোর তালিকা তৈরি করার জন্য নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।

মো. রবিউল হাসান/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।