বাসা থেকে তুলে নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করালো পুলিশ
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাসার চোকদারকে শরীয়তপুর-৩ আসনের এমপি নাহিম রাজ্জাক ডিবি পুলিশের মাধ্যমে তুলে নিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ তার সমর্থকদের।
তবে এ ব্যাপারে এমপি নাহিম রাজ্জাক কথা বলতে রাজি না হলেও ডিবির ওসি বললেন, আমাদের উপর অভিযোগটি ভিত্তিহীন।
তিনি আরো বলেন, আবুল বাসার চোকদারের পুলিশি কোনো অভিযোগ নেই। আমাদের কোনো ডিবি পুলিশ তাকে ধরেনি। আমরা এমপির নিরাপত্তার জন্য এখানে এসেছি।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাসার চোকদারের পরিবার ও তার সমর্থকদের সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে আবুল বাসার চোকদার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। রোববার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। হঠাৎ করে সকাল ৬টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাসার চোকদারকে তার বাস ভবন থেকে তাকে ডামুড্যা থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে এমপি নাহিম রাজ্জাকের গাড়িতে করে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর এলাকার সহস্রাধিক কর্মী সমর্থক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে ভিড় জমায়। পরে এমপি নাহিম রাজ্জাক জেলা প্রশাসকে কার্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাসার চোকদার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়ে কারো সঙ্গে কোনো কথা না বলে বাড়ি চলে যায়। এসময় ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী ও তার শত শত সমর্থকরা সঙ্গে ছিলেন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাসার চোকদারের ছোট ভাই শামীম চোকদার বলেন, সকাল ৬টার সময় ওসিসহ ডিবি পুলিশের কিছু লোক বাসায় যায়। বাসায় গিয়ে আমার ভাই বাসার চোকদারকে বলে আমাদের সঙ্গে যেতে হবে। তিনি নাস্তা করার সময় চাইলে তাকে সময় না দিয়ে ডামুড্যা থানায় নিয়ে যায়। পরে এমপির বাসায় নেয়। এ কথা শুনে আমরা এমপি নাহিম রাজ্জাকের বাসায় যাই। সেখানে গেলে শুনি এমপি তার গাড়িতে করে তাকে ডিসি অফিসে নিয়ে গেছে। তাৎক্ষণিক আমরা ডিসি অফিসে আসি। এসে দেখি এমপি চলে যাচ্ছে কিন্তু বাসার ভাইকে পাচ্ছি না। বাসার ভাই যাতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করতে পারে তাই এ কাজটি এমপি নাহিম রাজ্জাক করেছেন।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বেপারী ও সহ সভাপতি আ: জাব্বার রাড়ী বলেন, এমপি নাহিম রাজ্জাক যা করেছেন ভালো করেছেন। আমরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল বাশার চোকদার কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আসলে আমি দলের সিদ্ধান্ত মেনেই মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছি। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো কিছু বলার সুযোগ নেই।
শরীয়তপুর ডিবির ওসি সুব্রত কুমার সাহা বলেন, আবুল বাসার চোকদারের বিরুদ্ধে পুলিশি কোনো অভিযোগ নেই। আমাদের কোনো ডিবি পুলিশ তাকে ধরতে যায়নি। আমরা এমপির নিরাপত্তার জন্য ডিসি অফিসে এসেছি। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা ভিত্তিহীন।
ছগির হোসেন/এমএএস/আরআইপি