ঘর পাওয়ার খুশিতে ছেলের নাম রাখলেন ‘শেখ মুজিবুর রহমান’
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বালুন্ডা গ্রামের হাফিজা বেগম। তাই উপহারের ঘরে জন্ম নেয়া সন্তানের নাম রেখেছেন ‘শেখ মুজিবুর রহমান’।
নবজাতককে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান ও শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা। বঙ্গবন্ধুর নামে নাম রাখায় তাকে দেখতে অনেকে ভিড় করছেন।
বেনাপোলের পাটবাড়ি গ্রামের ছেলে আসাদুল হক (৪০)। পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে হয় পুটখালী ইউনিয়নের বালুন্ডা গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে হাফিজা খাতুনের (৩০) সঙ্গে। কিন্তু বাবার পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ঘরজামাই ছিলেন আসাদুল। এরই মধ্যে একে একে জন্ম হয় তিন সন্তান।
সম্প্রতি পুটখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার হাদিউজ্জামানের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান আসাদুল। উপহারের ঘরে গত জুন মাসের শেষ দিকে উঠেই ২১ দিন পর ছেলেসন্তান জন্ম দেন তার স্ত্রী হাফিজা বেগম। ভূমিহীন এ পরিবারটি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে মনের আনন্দে নবজাতক সন্তানের নাম রাখেন ‘শেখ মুজিবুর রহমান’।
শার্শা উপজেলায় মোট ১২৭টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ হয়েছে। তার মধ্যে বালুন্ডা গ্রামে ১০ জন উপকারভোগী পেয়েছেন ১০টি ঘর। এ প্রকল্পের ঘরগুলোতে রান্নাঘর, গোসলখানা, টয়লেট, বিদ্যুতের ব্যবস্থা এবং জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বরাদ্দ একটি আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ। যেটা পেয়ে খুশি এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মানুষগুলো।
হাফিজা খাতুন বলেন, আগে অন্যের জমিতে থাকতাম। যে ঘরে থাকতাম তা একটু বৃষ্টি হলেই কাদা হয়ে যেত, ঝড়ের সময় আশঙ্কায় থাকতাম এই বুঝি ঘরটা উড়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জমিসহ পাকাঘরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই খুশি হয়ে তার বাবার নামেই আমার ছেলের নাম রেখেছি ‘শেখ মুজিবুর রহমান’।
বালুন্ডা আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্যান্য উপকারভোগী তানজিলা (২৫) ও সাবিনা (৫৫) বলেন, ‘আমরা ঘর আর শেখ মুজিবুরকে (নবজাতক) পেয়ে অনেক খুশি।’
উপকারভোগী আব্দুর সাত্তার (৭০) বলেন, ‘চার ছেলেমেয়ে নিয়ে জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। কোনোদিন ভাবিনি পাকা ঘরে শোব। হাসিনা আমার ঘর দেছে, ইকিনে কারেন (বিদ্যুৎ) আচে, টিউকল (নলকূপ) আচে, রান্নাঘর আছে সব আচে। আমি হাসিনার জন্যি নামাচ (নামাজ) পড়ি দোয়া করি।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লাল্টু মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যেভাবে ঘরগুলো নির্মাণ করার নির্দেশনা দিয়েছে, নকশা ঠিক রেখে আমরা সেভাবেই করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর আলিফ রেজা বলেন, “যশোরের জেলা প্রশাসক স্যার এখানে একদিন এসেছিলেন। তিনিই আবিষ্কার করেছেন বালুন্ডা আশ্রয়ণ প্রকল্পের একজন উপকারভোগী আছেন, যিনি এখানে আসার পরে তার একটি সন্তান হয়েছে। তিনি ওই সন্তানের নাম রেখেছেন ‘শেখ মুজিবুর রহমান’।”
জামাল হোসেন/এসআর/জেআইএম