মুক্তি পেল নেত্রকোনার সেই দুই শিশু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নেত্রকোনা
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০২১
ফাইল ছবি

নেত্রকোনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই শিশুকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে তাদের মুক্তি দেয়া হয়।

এর আগে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই শিশুর মুক্তির জন্য নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের রিট এখতিয়ার সম্পন্ন বেঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বরাবর আবেদন করেছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদেরকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা জানা গেছে, অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতার কারণে প্রায় দুবছর ধরে ওই দুই শিশু লেখাপড়ার পাশাপাশি ঢাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করে আসছে। এ সময় উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু ছেলেটি তা প্রত্যাখ্যান করে।

ঈদুল আজহার আগে দুজনই গ্রামের বাড়িতে আসে। এরপর বিয়ের দাবিতে মেয়েটি ২৮ জুলাই রাত থেকে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নেয়। নিরুপায় হয়ে ১ আগস্ট সন্ধ্যায় উভয় পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু খবর পেয়ে বাদ সাধে আটপাড়া উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়া লোক পাঠিয়ে তার কার্যালয়ে ডেকে এনে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী দুজনকেই এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশন দেন। ওই দুই শিশুর দণ্ডাদেশ নিয়ে স্থানীয় ও সচেতন মহলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

এ ব্যাপারে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর রাসেল আহম্মদ বলেন, ‘শিশু সম্পর্কিত কোনো ঘটনা বা অপরাধের বিচার একমাত্র শিশু আদালতের এখতিয়ার রয়েছে। এতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই। আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে যে দণ্ডাদেশ দিয়েছেন, তা আইনের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অবৈধ।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাননি আটপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘শিশুদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আপিল করা হলে তা গ্রহণ করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) বিষয়টি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশের আগেই শিশুদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এরইমধ্যে শিশুদের খালাস দেয়া হয়েছে। আদেশে তাদের উভয়ের বাবা-মার কাছে বুঝিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে সুলতানা রাজিয়ার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।’

এইচ এম কামাল/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।