ফেনী হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে শয্যার চারগুণ বেশি রোগী
ফেনী জেলায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। ক্রমেই বাড়ছে শনাক্ত ও মৃত্যু। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৩০টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন চারগুণ বেশি রোগী। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোগী ও স্বজনদের পক্ষ থেকেও নানা অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৪ আগস্ট) পর্যন্ত ফেনী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৩০ শয্যার বিপরীতে ১৪৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ৩৫ জন, উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ১১১ জন। সব রোগীরই প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন সাপোর্ট।
করোনা ইউনিটের একটি সূত্র জানায়, রোগীর চাপ বেশি থাকায় শয্যার পাশে মেঝেতে ফোম বিছিয়ে অন্যদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। চার শয্যার কক্ষে ১০-১২ জন রোগী গাদাগাদি করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
রোগী ও স্বজনরা জানান, করোনা ওয়ার্ডের একটি কক্ষে উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। করোনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হলে আলাদা কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও রোগী রাখার জায়গা নেই। যাদের নেগেটিভ আসে তারাও সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত করোনা ইউনিটে থাকেন।
স্বজনদের অভিযোগ, একই কক্ষে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে এসে সংক্রমণ বাড়ছে। রোগীর চাপে চিকিৎসক-নার্সরা ঠিকমতো রোগী দেখছেন না।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল খায়ের মিয়াজী বলেন, ‘বুধবার সকাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচগুণ রোগী করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অতিরিক্ত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে নানা সমস্যা হচ্ছে। এরপরও চিকিৎসক ও নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি হাসপাতালটিতে ৬ হাজার লিটারের লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক যোগ হয়েছে। এটি পরীক্ষামূলক চলছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম পুরোপুরি চালু হলে ২৫০ শয্যায় করোনা ও উপসর্গ আক্রান্তদের চিকিৎসা দেয়া যাবে। এরই মধ্যে হাসপাতালটিতে শয্যা বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানানো হয়েছে। আশা করি শিগগিরই শয্যা ও জনবল সঙ্কটের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাব।’
এদিকে জেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১০৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ১১২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের থেকে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৯৫৩ জন। এ পর্যন্ত সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেনসহ জেলায় ১০২ জন মারা গেছেন।
আইইডিসিআর’র নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক বুলেটিনে জানানো হয়, করোনা আক্রান্ত হয়ে ফেনীর ২১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নুর উল্লাহ কায়সার/এসজে/এমএস