অপমান সইতে না পেরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা : শিক্ষক বহিষ্কার


প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫

নারায়ণগঞ্জ শহরের গণবিদ্যা নিকেতন স্কুলের শিক্ষকের চপেটাঘাতের অপমান সহ্য করতে না পেরে স্কুলছাত্রী উম্মে হাবিবা শ্রাবণীর আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুল হাসান মুন্নাকে বহিষ্কার করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটি।

এছাড়াও একই ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলের শিক্ষিকা নাসিরন বেগমকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
 
শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্কুলের শিক্ষক মিলনায়তনে কয়েক ঘণ্টার সভায় সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এদিকে শিক্ষকের চপেটাঘাতের অপমান সহ্য করতে না পেরে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় সারাদেশে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ঘটনার তোলপাড় সৃষ্টি হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রশাসন সোচ্চার হয়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুল কমিটিকে চাপ সৃষ্টি করলে স্কুল কমিটি এক জরুরী সভায় বিতর্কিত শিক্ষককে বহিষ্কার করে।
 
উম্মে হাবিবা শ্রাবণী গণবিদ্যা নিকেতন স্কুলের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। নারায়ণগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ ছালাপট্টি এলাকার মো. হাবিবউল্লার মেয়ে সে।

গণবিদ্যা নিকেতনের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মুকুল জাগো নিউজকে বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো অভিযোগ না দেয়ায় এবং ওই ছাত্রীর লিখে যাওয়া চিঠির ওপর ভিত্তি করে কামরুল হাসান মুন্নাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষিকা নাসরিন বেগমকে ওইদিনের ঘটনা লিখিত ভাবে জানানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
 
তিনি আরো বলেন, ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন গ্রামের বাড়িতে থাকায় কয়েকদিন পর অনুষ্ঠানিকভাবে স্কুলে শোক সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ওই পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে কামরুল হাসান মুন্নাকে চাকরিচ্যুত করা হবে।

প্রঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার শহরের গণবিদ্যা নিকেতন বার্ষিক পরীক্ষার অংশ হিসেবে পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উম্মে হাবিবা শ্রাবণী। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অসদুপায় (নকল) অবলম্বনের অভিযোগে পরীক্ষার পরিদর্শক নাসরিন বেগমকে আটক করে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যায়। এসময় ওই কক্ষে থাকা স্কুলের খণ্ডকালীন শিক্ষক কামরুল হাসান মুন্না শিক্ষার্থী শ্রাবণীকে উপুর্যপরি চড় থাপ্পড় মারেন এবং গালমন্দ করে পরিবারের কাছে অভিযোগ করবে বলেন। পরে ওইদিনের পরীক্ষা থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

এঘটনার পর অপমান সইতে না পেরে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রাবণী আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।

এছাড়াও হাবিবা আত্মহত্যার কারণ হিসেবে স্কুলের শিক্ষিকা নাসরিন বেগম ও খণ্ডকালীন শিক্ষক কামরুল হাসান মুন্নার নাম উল্লেখ করে চিরকুট লিখে যায়।

শাহাদাত হোসেন/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।