অভাবে শিশুসন্তান বিক্রি করে দিল দম্পতি, ১৬ দিন পর উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ০৮:২৮ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২১

টাঙ্গাইলে অভাবের কারণে ৪৫ হাজার টাকায় বিনিময়ে তিনমাস বয়সী শিশুসন্তানকে বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে। গোপালপুর উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ১৬ দিন পর শুক্রবার (১৬ জুলাই) শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

ওই শিশু উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহ আলম ও রাবেয়া দম্পতির সন্তান। তাদের আরও দুই সন্তান রয়েছে।

শিশুর মা রাবেয়া বলেন, দিনমজুর স্বামী শাহ আলমের উপার্জনে পাঁচজনের সংসার চলে না। এর মধ্যে করোনায় কয়েকমাস ধরে শাহ আলম বেকার। ধারদেনা করে সংসার চালাতে থাকেন। পাওনাদাররা প্রতিদিনই টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন। হতাশায় স্বামী মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় পাওনা টাকা পরিশোধ ও সংসারের অভাব-অনটনের কারণে তিনমাস বয়সী শিশুকে বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতির কাছে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, সবুজ ও স্বপ্না দম্পতির কোনো সন্তান নেই। তারা শাহ আলম-রাবেয়া দম্পতির অভাব-অনটনের সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে শিশুটি কিনে নেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা সেটি করেননি। এ কারণে প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশুটি উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলে পৌঁছে দেয়।

তিনি আরও জানান, শিশুটির নাম আলহাজ। তবে কেউ আগ্রহ প্রকাশ না করায় এবং মানবিক দিক বিবেচনায় এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা নেয়া হয়নি।

গোপালপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ মল্লিক জানান, অভাবে পড়ে তারা এটি করেছেন। পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। রাবেয়া বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়া পদে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আতাউল গণি বলেন, ওই শিশুর যাবতীয় ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়া হবে।

আরিফ উর রহমান টগর/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।