চৗেগাছায় বিএনপির হ্যাট্রিক জয়ের সম্ভাবনা


প্রকাশিত: ১১:৩৫ এএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৫

যশোরের চৌগাছা পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী বর্তমান মেয়র সেলিম রেজা আওলিয়ারের এবার হ্যাট্রিকের সুযোগ। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লড়াই প্রথমবারের মতো পৌরসভার মেয়রের চেয়ার কব্জা করার। তৃতীয়বারের মতো জয়লাভের জন্য বিএনপি সুবিধাজনক স্থানে থাকলেও আওয়ামী লীগের ঘরেই রয়েছে বিবাদ।

বিএনপি একক প্রার্থী দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলেও মাঠে রয়েছে আওয়ামী লীগের শক্ত বিদ্রোহী প্রার্থী। তাই এ পৌরসভার মেয়র পদে জয়-পরাজয়ে নানা হিসেব নিকেশ ও মেরুকরণের কথা বলছেন সাধারণ ভোটাররা।  

চৌগাছা পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন চার প্রার্থী। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, বিএনপি সমর্থিত সেলিম রেজা আওলিয়ার এবং স্বতন্ত্র হিসেবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এসএম সাইফুর রহমান বাবুল ও জামায়াতের নেতা মাস্টার কামাল আহমেদ।

পৌরবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চৌগাছায় এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যুবলীগ নেতা নুরুদ্দিন আল মামুন হিমেল। আর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা এসএম সাইফুর রহমান বাবুল বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। এবার মনোনয়ন বঞ্চিত বাবুল ২০১১ সালের নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পেলেও পরাজিত হয়েছিলেন। সেসময় বিদ্রোহী হিসেবে মাঠে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তৌহিদ দেওয়ান। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে জয় সহজ হয়েছিল বিএনপি প্রার্থীর। এবারও আওয়ামী লীগে রয়েছে সেই বিদ্রোহের আগুন।

তবে চৌগাছা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ মিশ্র জয় জানিয়েছেন, গত দুইবার পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীক ছিল না। এবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকের নৌকার বাইরে যাবে না। নৌকার প্রার্থী হিমেল জয়ী হবেন।

তিনি আরও বলেন, যারা পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন তারা ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও নৌকার বিপক্ষে ছিলেন। তবে আগামি ১৩ ডিসেম্বরের পর তারা নৌকার বিরুদ্ধে থাকবেন না বলেও অভিমত তার।  

আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, বিগত দুই নির্বাচনে পরাজয়ের মূল কারণ ছিল দলের মধ্যে ঐক্যের অভাব। দলের বিভেদ কাজে লাগিয়ে বিএনপি প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘরানার দুইজন এবং জোটের বিএনপি ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তাই তাদের মধ্যে এসএম সাইফুর রহমান বাবুলের জয়ের সম্ভাবনা বেশি।

পক্ষান্তরে, সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপি প্রার্থী সেলিম রেজা আওলিয়ার। ২০০৭ সালে এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হন। এর আগে ২০০৪ সালে চৌগাছা পৌরসভা গঠিত হলে প্রশাসক হিসেবেও তিন বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এবারের নির্বাচনে তাই তৃতীয়বারের মতো মেয়রের চেয়ার ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ তার।

ধানের শীষ প্রতীকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে সে চ্যালেঞ্জে বেশ খানিকটা এগিয়েও আছেন তিনি। তবে জামায়াতের প্রার্থী মাঠে থাকায় বিএনপির বাইরে জোটগত ভোট নিয়ে সংশয় রয়েছে তার। তাই বিএনপি প্রার্থীর জয়-পরাজয়ে জামায়াতের ভোট ফ্যাক্টর হতে পারে বলেও জানিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
 
চৌগাছা উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহবার হোসেন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, বিএনপির প্রার্থীর মাঠ ভালো আছে। তাদের দলের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারলে এবারও আওলিয়ার জয়ী হবেন। চৌগাছায় বিএনপির জন্য জামায়াতের প্রার্থী কোনো ফ্যাক্টর নয় বলেও দাবি তার। জামায়াতের কর্মীরা জামায়াতের প্রার্থীকে ভোট দেবে এমন কোনো গ্যারান্টি নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মিলন রহমান/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।