শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের পাশের খোলা জায়গা যেন ময়লার ভাগাড়
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরের ‘মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসাবর্জ্য বিনষ্ট বা শোধন না করে ফেলা হচ্ছে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের পাশে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চার বছর আগে মির্জাপুর সদয় কৃষ্ণ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠটিকে ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম’ নামকরণ করে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এজন্য স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে একটি আধুনিক ক্রীড়া ভবন ও দর্শকদের বসার জন্য মাঠের চারপাশে বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে সমবায় সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ‘মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামে ১০ বেডের একটি ক্লিনিক রয়েছে। ওই ক্লিনিকের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, গজ, ক্যাথিটার, ব্যান্ডেজ, তুলা, স্পঞ্জ, ড্রেনেজ টিউব, রক্ত সঞ্চালনের ব্যাগ-টিউব, রক্ত দ্বারা সংক্রমিত স্যালাইন সেট, জমাট বাঁধা রক্ত বা দেহরস, ডায়রিয়া রোগীর সংক্রমিত কাপড়-চোপড়, সংক্রমিত স্যাল্যাইনের প্যাকেটসহ ক্লিনিকের বর্জ্য ওপর থেকে নিচে স্টেডিয়ামের দক্ষিণপাশে খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য কুকুর-বিড়াল মাঠে এনে ফেলছে। এসব বর্জ্য রোদে শুকিয়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঠে খেলাধুলার সময় অনেক খেলোয়াড় এবং কেনাকাটা করতে আসা অনেকের পায়ে সিরিঞ্জের সুই লেগে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। ক্লিনিকের বর্জ্য বিনষ্ট ও শোধন করার জন্য ইনসিনেরেটর (চিকিৎসাবর্জ্য বিনষ্ট করার চুল্লি) থাকার কথা থাকলেও ওই ক্লিনিকে নেই।
মির্জাপুর বাজার একাদশের সাবেক অধিনায়ক কাউছার আহমেদ চপল। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই মাঠে আমি একজন নিয়মিত খেলোয়ার। করোনার কারণে কাঁচাবাজারটি এক মাস হলো এই স্টেডিয়ামে আনা হয়েছে। মাঠে খেলার সময় অনেক খেলোয়াড়ের পায়ে সিরিঞ্জের সুই ফুটে যায়। একটি ক্লিনিকের বর্জ্য ওখানে ফেলা হয়। ওই বর্জ্য কুকুর-বিড়াল মাঠে এনে ফেলছে।’
মির্জাপুর ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন জানান, মাঠের পাশে খোলা স্থানে বর্জ্য না ফেলার জন্য ক্লিনিক মালিকদের একাধিকবার নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও তারা বর্জ্য ফেলা বন্ধ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জাপুর উপজেলা ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি মো. আনিসুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্লিনিক মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে বর্জ্য পুড়িয়ে ধ্বংস করার ব্যবস্থা করা হবে।
পরিবেশ অধিদফতর টাঙ্গাইল অফিসের উপপরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, ওই ক্লিনিকের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলা চিকিৎসাবর্জ্য বিধিমালা ২০০৮ ধারায় অপরাধ। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম বলেন, খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলা যাবে না। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের মারাত্মক ঝুঁকি থাকে। এসব বর্জ্য নিয়ম অনুযায়ী বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে ইনসাইনেরেটরে বিনষ্ট ও শোধন করতে হবে।
জানতে চাইলে মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও উপজেলা ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।
এস এম এরশাদ/এসআর/জেআইএম