আইসোলেশনে থেকেও দোকানে গিয়ে ধূমপান, দোলনায় দোল
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) দ্বিতীয় ঢেউয়ে সারাদেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অন্যান্য জেলার তুলনায় কম হলেও কয়েক দিন ধরে বেড়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৬ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৩১০ জন। সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৭৯৪ জন। রোববার (৪ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ২৩ জন।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আইসোলেশন ওয়ার্ডে থাকা রোগীরা অবাধে বাইরে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করছেন। হাসপাতালের ভেতরে অবস্থিত দোকানে চা পান করছেন, সিগারেট ফুঁকছেন। শুধু তাই নয়, করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা আইসোলেশন ওয়ার্ডে খেয়ালখুশি মতো ঢুকে আড্ডায় মেতে উঠছেন। আইসোলেশন ওয়ার্ডের পেছনে গাছে দোলনা বেঁধে দোল খেতেও দেখা যায় করোনা আক্রান্ত তরুণীদের।
করোনা আক্রান্ত এক তরুণীকে দেখা গেল হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হাসপাতালে আসা এক রোগীর স্বজনকে দেখা যায়, হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের ভেতরে গিয়ে টয়লেটের খোঁজ করছেন।
রোববার হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে আইসোলেশনে অবাধ ঘোরাফেরার বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। ভার্চুয়ালি মিটিংয়ে যুক্ত ছিলেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (বিজয়নগর-সদর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান, বিএমএর জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমি সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই হাসপাতালে যোগদান করেছি। আজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি। এখানে ৫০ শয্যার আইসোলেশন বলা হলেও বাস্তবে শয্যা সংখ্যা অনেক কম। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার জেলার সিভিল সার্জন ও বিএমএর সাধারণ সম্পাদককে দাওয়াত দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকের মিটিংয়ে আইসোলেশনের রোগী ও তাদের স্বজনদের অবাধে ঘোরাফেরার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিষয়টি দেখবেন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেয়া হবে।’
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/জিকেএস