ঝিনাইদহে বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে চাতাল শ্রমিকরা
ঝিনাইদহ সদরের ডাকবাংলা বাজারের ত্রিমোহনী এলাকায় কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে প্রায় ২০টি চাতাল ও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে দাবি মালিকদের।
এছাড়া পানি উঠেছে এসব চাতালের শ্রমিকদের থাকার ঘরে। প্রায় দুইমাস ধরে বন্ধ রয়েছে চাতালের চাল উৎপাদন কার্যক্রম। বেকার হয়ে অসহায় দিনযাপন করছেন দুই শতাধিক শ্রমিক।
শনিবার (৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে ত্রিমোহনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার চাতালগুলোর পাশে একটি বিল ছিল। এ বিল দিয়ে এসব নিচু এলাকার পানি নিষ্কাশিত হতো। কিন্তু একবছর আগে শুকনো মৌসুমে এ বিলে পুকুর খনন করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। ফলে বন্ধ হয়ে যায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। এতে কয়েকদফা বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।
জলাবদ্ধতায় বন্ধ এক চাতালের শ্রমিক আবু তালেব জানান, চাতালে কাজ করে সংসার চলে। কিন্তু বৃষ্টিতে পানি জমে প্রায় দুইমাস আগে চাতাল বন্ধ রয়েছে। ফলে রোজগার না থাকায় কষ্টের মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে। কখনও কখনও তিনবেলাই খাবার জুটছে না।
জলাবদ্ধতায় ভুক্তভোগী একটি বাড়ির মালিক ইমান আলী বলেন, পাশেই পুকুর কেটে বাঁধ দেয়ায় বৃষ্টিতে এখানে পানি জমে গেছে। এ পানি বের হতে না পেরে আমাদের ঘরে ঢুকছে। খুবই সমস্যা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো কাজ হচ্ছে না।
চাতাল মালিক ও ডাকবাংলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন ভান্ডারী বলেন, আমাদের চাতালের পাশে প্রভাবশালীরা পুকুর খনন করায় এলাকার পানি বের হচ্ছে না। এখন পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কিছু বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রায় ২০টি চাতাল ক্ষতিগ্রস্ত ও উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকায় কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, এ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দেন। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিন পরে অটো রাইসমিলের ভেতরেও পানি উঠবে। ফলে কোটি কোটি টাকার লোকসানের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শাহীন বলেন, এলাকাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এসএমএম/জিকেএস