বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল সুবর্ণচরের ৭৮ হাজার গ্রাহক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৮:৫২ এএম, ২৩ জুন ২০২১
প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বিদ্যুত বিভ্রাটে ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের ৭৮ হাজার গ্রাহক। এতে বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা, নষ্ট হচ্ছে পড়ালেখা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক মাস যাবত এ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্রশিল্প, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ধ্বংস হতে বসেছে।

সুবর্ণচরের হারিছ চৌধুরী বাজারের ব্যবসায়ী আবদুস সোবহান মঙ্গলবার (২২ জুন) বিকেলে অভিযোগ করে বলেন, আজ সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাইকিং করে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্রতিদিন মাইকিং ছাড়াই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে।

স্থানীয় শিক্ষক আরিফুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস করে। কিন্তু দিনে-রাতে বিদ্যুতের অভাবে শিক্ষার্থীরা ক্লাসও করতে পারে না। আবার রাতের বেলায় পড়তেও পারে না।

আবু মুসা নামে একজন জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য ক্লিনিকগুলোতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এছাড়া জুন ক্লোজিংয়ের কারণে ফটোকপির দোকানগুলোতে ভিড় থাকলেও বিদ্যুতের কারণে কাজে নেমেছে ধীরগতি।

পল্লী বিদ্যুতের সুবর্ণচর জোনাল অফিস সুত্র জানায়, সুবর্ণচরের ১২ ইউনিয়ন ও হাতিয়ার হরনী ও চানন্দিসহ ১৪ ইউনিয়নে মোট গ্রাহক সংখ্যা ৭৮ হাজার। এখানে ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার লাইন সম্প্রসারণ করে সংযোগ দেয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পাঁচটি সেকশন (ফিডার) থাকলেও সোনাপুর থেকে মেইন লাইন একটাই এসেছে। তাই ওই ৩৩ কেভি লাইনের কোথাও ত্রুটি দেখা দিলে পুরো উপজেলাই অন্ধকারে থাকে।

সুত্র আরও জানায়, গরমের দিনে এখানে ১৩ দশমিক ৫০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ লাগলেও এখন বৃষ্টির সময় তা ১০ মেঘাওয়াটে নেমে এসেছে। তবে ২৮ মেঘাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ থাকলেও ৩৩ কেভি লাইনের ত্রুটির কারণে গ্রাহকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সুবর্ণচর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) ফসিউল হক জাহাঙ্গীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। তবে দীর্ঘ লম্বা ৩৩ কেভি লাইনের কারণে অনেক সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে সমস্যা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভুইয়ার হাট সেন্টার বাজারে একটি সাব স্টেশন হচ্ছে এবং মান্নান নগরে আরেকটি গ্রিড সাব স্টেশন হওয়ার কথা রয়েছে। এগুলোর কাজ শেষ হলে সমস্যা অনেকটা দূর হবে।’

ডিজিএম বলেন, ‘সুবর্ণচরে প্রতিমাসে গড়ে তিন কোটি ৪০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে। এখানে ৮ কোটি টাকার মতো বকেয়া রয়েছে। আমরা বিভিন্নভাবে বিল পরিশোধের তাগাদা দিচ্ছি। অপরিশোধিত বিলের বিপরীতে আগামী জুলাই থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’

ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।