সিলেট-৩ উপনির্বাচন : হেভিওয়েট তিন প্রার্থীই স্নাতক পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ০৯:৩৫ এএম, ১৯ জুন ২০২১

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ জুলাই। এ উপনির্বাচনের ভোট নেয়া হবে ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়।

এই উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে বৃহস্পতিবার দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তিন হেভিওয়েটসহ বাকি চার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে, এ উপনির্বাচনে অংশ নেয়া ৬ প্রার্থীর হলফনামার তথ্য অনুযায়ী একজনের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স, তিনজন স্নাতক পাস, একজনের এইচএসসি ও একজন স্বশিক্ষিত। তাদের মধ্যে দুজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও দুজন ব্যবসায়ী রয়েছেন।

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে লড়তে গত ১৫ জুন ৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাহমিদা হোসেন লুমা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ জাহিদুর রহমান মাসুম। এদের মধ্যে শেষোক্ত দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

জানা গেছে, শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম মনোনয়নপত্রে মোট ভোটারের এক শতাংশ ভোটারের কোনো তথ্য দেননি। আর নারী প্রার্থী ফাহমিদা হোসেন লুমা ভোটারদের তথ্য দিলেও তা সঠিক না হওয়ায় মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তবে তারা দুজনই আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রার্থীদের দেয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী- আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাবিবুর রহমান হাবিব স্নাতক পাস বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান আতিক নিজের হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএসসি (স্নাতক)।

এছাড়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও দুবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী নিজের হলফনামায় চিটাগাং সরকারি কলেজ থেকে বিএ পাস করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি পেশায় পূবালী ব্যাংকের অন্যতম পরিচালক ও ব্যবসায়ী। এই তিন প্রার্থীকেই নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন ভোটাররা।

বৈধ হওয়া চার প্রার্থীর মধ্যে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত যুক্তরাজ্য প্রবাসী জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া হলফনামায় লিখেছেন ‘স্বশিক্ষিত’। তবে তিনি জানান, ১৯৭৯ সালে ওসমানীনগরের তাজপুর মঙ্গলচণ্ডী স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে যুক্তরাজ্য চলে যান। সেখানে তিনি উচ্চতর ডিগ্রি নেন। কিন্তু সে দেশের শিক্ষার সনদগুলোতে নামের জটিলতা থাকায় হলফনামায় তিনি ‘স্বশিক্ষিত’ উল্লেখ করেছেন।

সিলেট-৩ আসনের একমাত্র নারী প্রার্থী স্বতন্ত্র ফাহমিদা হোসেন লুমা ২০০৪ সালে সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে একাউন্টিং বিষয়ে মাস্টার্স পাস করেছেন। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী এই নারী প্রার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতাই সবচেয়ে বেশি।

আর স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ জাহিদুর রহমান মাসুম হলফনামায় নিজেকে এইচএসসি পাস বলে দাবি করেছেন। যদিও নির্দিষ্ট মনোনয়নপত্রে ফরমে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার গড়ে উল্লেখ করেছেন ‘এইচএসসি’। ২০০৩ সালে সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে পাস করেছেন বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এরপর ১৫ মার্চ এই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। করোনার কারণে কিছুটা দেরিতে এ আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৪ জুন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৫ জুন সকালে। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার। মোট ভোটকেন্দ্র ১৪৯টি।

মাহমুদ/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।