দিনাজপুরে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত-মৃত্যু, বিভিন্ন পয়েন্টে প্রচারণা
সীমান্তবর্তী জেলা দিনাজপুরে করোনা শনাক্তের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জনগণকে সতর্ক করতে শহরের প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মাইক লাগিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সদর উপজেলায় ইয়াছিন আলী (৭৫) ও চিরিরবন্দর উপজেলায় আরিফ হোসেন (৫৫) করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
গত দশ দিনের হিসাবে দেখা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২৮ জন, যার মধ্যে সদর উপজেলাতে ১৬৮ জন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ সদর উপজেলাতেই।
এখন পর্যন্ত দিনাজপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩১ জন। যার মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতে রয়েছেন ৬৩ জন। আর ১লা মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত মারা গেছে ১৯ জন।
এদিকে ৪ মে শুক্রবার পর্যন্ত এনওসি নিয়ে হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে আটকাপড়া বাংলাদেশি যাত্রী ফিরেছে ১৭৮ জন। এদের মধ্যে কোয়ারেন্টাইন শেষ হওয়ায় ২৯ জন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব বলছে, প্রতিদিন জেলার ১৩টি উপজেলাতে যে পরিমাণে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয় তার অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণ সদর উপজেলায়। গত দশ দিনের হিসাবে দেখা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২২৮ জন, যার মধ্যে সদর উপজেলাতে ১৬৮ জন। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৭৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ সদর উপজেলাতেই।
এখন পর্যন্ত দিনাজপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩১ জন, যার মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতে রয়েছেন ৬৩ জন। অর্থাৎ মোট মৃত্যু ৪৮.০৯ শতাংশই সদর উপজেলায়। বাকি ১২টি উপজেলায় ৫১.৯১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত এই জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৯২৫ জনের। যার মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতেই ৩ হাজার ৩৩৮ জন। শনাক্তের ৫৬.৩৪ শতাংশই সদরে।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার এই জেলায় মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪০টি আর শনাক্ত হয়েছে ৩২টি। করোনা শনাক্তের হার ২২.৮৫ শতাংশ। এর মধ্যে সদর উপজেলার নমুনা ছিল ৭৩টি আর শনাক্ত হয়েছে ২৭টি। অর্থাৎ এই উপজেলায় শনাক্তের হার ৩৬.৯৮ শতাংশ। এর আগে বৃহস্পতিবার এই উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার ছিল ৪৮.৩৩ শতাংশ।
ওইদিন সদর উপজেলায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয় ৬০টি। এর মধ্যে শনাক্ত হয় ২৯টি। ওইদিন পুরো জেলায় করোনার পরীক্ষা হয়েছিল ১৪০টি এবং শনাক্ত হয়েছিল ৩৫টি। শনাক্তের হার ছিল ২৫.০০ শতাংশ।
সদর উপজেলায় করোনার শনাক্তের হার বাড়ার বিষয়ে কথা হলে সিভিল সার্জন ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, ‘এখনও সদর উপজেলা লকডাউনের সময় হয়নি, দেরি আছে। তবে শহরে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে’।
এদিকে শহরের প্রবেশমুখগুলোসহ বিভিন্ন পয়েন্টে সার্বক্ষণিক প্রচারণার অংশ হিসেবে মাইক লাগিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে শহরের বাহাদুর বাজারসহ ১৬টি পয়েন্টে মাইক লাগিয়ে রেকর্ড বাজিয়ে প্রচারণা চালাতে শোনা যায়।
মাইক টাঙাতে আসা শ্রমিক গোপাল চন্দ্র দাস জানায়, গত ৩ দিন ধরে দিনাজপুর শহরে সকালে মাইক লাগিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেকড বাজিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই প্রচারণা চলবে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।
এমদাদুল হক মিলন/এমআরএম/জিকেএস