যশোরে বিভিন্ন মামলার আসামিরা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী
যশোরে হত্যা, চাঁদাবাজি, চুরিসহ বিভিন্ন মামলার আসামি ও বিতর্কিতরা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাদের দল থেকেও সমর্থন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভায় মেয়রপ্রার্থী পদে আওয়ামী লীগের টিকিট পেয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সুশান্ত দাস শান্ত। তিনি অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ার রহমান হত্যা মামলায় অন্যতম সন্দিগ্ধ। এ মামলায় আসামি আলামিন ফারাজী ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আদালতে উল্লেখ করেন তার নামটি। সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের বিচার মিল্টন হোসেন সেই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। যশোর ডিবির ওসি আলী আহমেদ হাশমী জানান, সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তবে মোল্লা ওলিয়ার রহমান হত্যাকাণ্ডে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছেন সুশান্ত দাস শান্ত।
যশোর পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী জুলফিক্কার আলী জুলু স্থানীয় সুমন নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তার নেতৃত্বে প্রকাশ্যে সুমনকে হত্যা করা হয়েছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এ বিষয়ে জুলফিক্কার আলী জুলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কাউন্সিলর থাকাকালীন একটি হত্যাসহ চারটি মামলার আসামি হয়েছেন। বিএনপির রাজনীতি করায় এই ষড়যন্তের শিকার হয়েছেন বলে তিনি মনে করেন।
যশোর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ হারুণ-অর-রশিদ ফুলু। তার ঢাকার ডেরা থেকে চুরি হওয়া নাভানা কোম্পানির ৪০ লাখ টাকার লুব্রিকেন্ট ওয়েল (মবিল) উদ্ধার করেছিলো পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে আটকও করেছিলো। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
যশোর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বেজপাড়ার বুনোপাড়ার আসাদুজ্জামান আসাদ। স্থানীয়রা যাকে ‘বুনো আসাদ’ নামে চেনে। তার বিরুদ্ধে দখল, চাঁদাবাজি, বোমাবাজিসহ যশোর কোতোয়ালি থানায় অন্তত দুই ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। এজন্য তাকে বহুবার কারাগারে যেতে হয়েছে। তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করে তাকে মামলায় জড়িয়েছেন বলে দাবি করেন আসাদ।
এদিকে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতরা জনপ্রতিনিধি হওয়ার বাসনা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় জনগণের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। ভোটের পরে নির্বাচিতদের কাছ থেকে সেবা পাওয়া নিয়েও তাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
এসব বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) যশোরের সভাপতি আবু সালেহ তোতা বলেন, রাজনীতিতে সৎ ও ভালো লোকজনের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কমছে। এখন বিতর্কিত ও নানা দোষে দুষ্টরা রাজনীতি করছে। ফলে ভোটের সময় তাদেরই কেউ কেউ প্রার্থী হচ্ছেন। এচিত্র সারা দেশেই। এটা থেকে বের হতে সুষ্ঠুধারার রাজনীতির চর্চা জরুরি।
মিলন রহমান/এমএএস/পিআর