ধর্ষণের শিকার কিশোরীর ভাইকে চুরির অপবাদে মারধর, পরে আত্মহত্যা
মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়েরের জের ধরে চুরির অপবাদ দিয়ে তার ভাইকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন ওই ছাত্রীর ভাই।
মঙ্গলবার (১ জুন) ভোরে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। শনিবার (২৯ মে) রাতে এলাকায় চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আব্দুল্লাপুর এলাকায় এক মাদরাসাছাত্রী প্রতিবেশী তিন কিশোরের একাধিকবার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে স্থানীয় বাবুল মিয়ার ছেলে ফাহিম, আফসার চৌধুরীর ছেলে সামি ও হাসান মিয়ার ছেলে হাবিবুরের বিরুদ্ধে টঙ্গীবাড়ী থানায় পৃথক দুটি ধর্ষণের মামলা করেন। অভিযুক্ত ফাহিম ও হাবিবুর বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। অপর অভিযুক্ত ধর্ষণের সহযোগী সামি জামিনে রয়েছেন।
এদিকে শনিবার (২৯ মে) রাতে ওই ছাত্রীর ভাই পারভেজ অভিযুক্ত প্রতিবেশী সামিদের বাড়ির ওপর দিয়ে আসছিলেন। এ সময় তাকে ধরে চুরির অপবাদ দিয়ে সামির ফুপা বাচ্চু কোতয়াল (৫৫), বাবা হাসান (৫০) ও হাসানের স্ত্রী (৩৫) ব্যাপক মারধর করেন। এতে অপমান সহ্য করতে না পেরে পরদিন রোববার (৩০ মে) বিষপান পান করেন।
তাকে দ্রুত মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান৷
মৃত পারভেজের বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে এমন একটা ঘটনা ঘটলো। এখন পোলাটারেও হারাইলাম। আমি এ ঘটনার কঠিন শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ধর্ষণের বিষয়ে মামলা আদালতে চলমান আছে। দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ছাত্রীর ভাইয়ের কীটনাশক পানে মৃত্যুর ঘটনাটি ভিকটিম পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পুলিশ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
আরাফাত রায়হান সাকিব/এসজে