নওগাঁয় চাইনিজ রেস্টুরেন্টের নৈশপ্রহরীকে পিটিয়ে হত্যা
নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে ‘ইডেন থাই অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট’ এর নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে সহকারী বাবুর্চি বাদল পলাতক রয়েছেন।
শনিবার (২৯ মে) দুপুরে রাজশাহীর অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শেষে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার চকমহিতুর গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে।
এর আগে শুক্রবার (২৮ মে) রাতের কোনো একসময় ইডেন থাই অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের তৃতীয় তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে নৈশপ্রহরী আতাউর রহমান ও সহকারী বাবুর্চি বাদল রাতে রেস্টুরেন্টের তৃতীয় তলায় ঘুমিয়ে পরেন। পরেরদিন শনিবার সকালে গিয়ে প্রধান বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম রেস্টুরেন্টের ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান।
এরপর দরজার বাইরে চাবি পরে থাকতে দেখেন তিনি। চাবি দিয়ে ঘর খুলে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় আতাউরের মরদেহ দেখতে পান। হত্যার পর মরদেহটি কাঁথা-বালিশ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। ঘটনাটি দ্রুত রেস্টুরেন্টের কর্তৃপক্ষকে জানালে থানায় খবর দেয়া হয়।
মরদেহের পাশে একটি চেয়ার ভাঙা অবস্থায় পড়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, চেয়ার দিয়ে আতাউর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের বড় ছেলে রতন হোসেন বলেন, শুক্রবার বিকেল ৫টায় বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। কুরবানি ঈদের জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে ১০ হাজার টাকা জমাবেন বলে জানান আমাকে। এরপর আবারও রাত ৮টায় ফোন দিয়েছিল কিন্তু আমি রিসিভ না করায় কথা হয়নি।
পরদিন সকাল সাড়ে ৮টায় রেস্টুরেন্ট থেকে ফোন করে জানানো হয় বাবাকে কারা যেন পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার বাবা একজন প্রতিবন্ধী মানুষ। তার সঙ্গে কারো দ্বন্দ্ব ছিল না। বাবাকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চাই।
নিহতের ফুফাতো ভাই উসমান গণি বলেন, আতাউর রেস্টুরেন্টে প্রায় ২০ বছর থেকে চাকরি করেছেন। শুনেছি ভাইয়ের কাছে কিছু টাকা ছিল। শনিবার রেস্টুরেন্টে একটি বিয়ে হবে। তাই ব্যস্ত থাকবেন। পরদিন টাকাগুলো বাড়িতে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ইডেন থাই অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের একটি দল এসে ঘটনাস্থল তদন্ত করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে পলাতক সহকারী বাবুচি বাদল পলাতক রয়েছে। তাকে আটকে অভিযান চলছে।
আব্বাস আলী/এসএমএম/এমএস