ফেরি বন্ধ, তবুও নেয়া হচ্ছে ভাড়া
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পদ্মা উত্তাল থাকায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে বুধবার (২৬ মে) ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে ফেরি চলাচল। তবে বাংলাবাজার ঘাটে আসা ঢাকামুখী যাত্রীদের কাছ থেকে ইজারাদারের লোকজন ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভাড়া বাবদ ২৫ টাকা নিয়ে টিকিটও দিচ্ছেন যাত্রীদের। টিকিট কাটার পর ‘ফেরি ছাড়বে’ এমন আশা নিয়ে ফেরিতে উঠে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকার পরও ফেরি না ছাড়ায় যাত্রীরা ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।
ফেরি বন্ধ থাকার পরও কেন টিকিট কাটা হচ্ছে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাটের দায়িত্বরত কেউ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
তবে বুধবার (২৬ মে) সকালে বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাটের অফিসিয়াল নম্বরে ফোন দিলে নাম প্রকাশ না করে দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যাত্রীদের ফেরিতে না উঠতে মাইকিং করা হচ্ছে। এরপরও যাত্রীরা জোর করে ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। যাত্রীদের তো আর পিটিয়ে নামানো যায় না।’
টিকিট কেন কাটা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
ঢাকাগামী কয়েকজন যাত্রী জানান, সকালে ফেরি চলাচল করছে এমন খবর পেয়েই ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ঘাটে এসেছেন তারা। রোরো ফেরিতে ভাড়া দিয়ে উঠে বসে আছেন। তবে ফেরি ছাড়ছে না। এদিকে শিমুলিয়া থেকে সকাল নয়টার দিকে দুটি রোরো ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে এসেছে। এ কারণে বাংলাবাজার থেকেও ফেরি ছাড়বে এমন আশা নিয়ে তারা অপেক্ষা করছেন।
তারা আরও জানান, ফেরিতে ওঠার আগেই যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছে। ২৫ টাকা করে যাত্রী ভাড়ার টিকিটও দিচ্ছে।
ঢাকাগামী যাত্রী সালমান রনি বলেন, ‘ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে ঘাটে এসেছি। ২৫ টাকা টিকিট কেটে ফেরিতে উঠেছি। কিন্তু ফেরি বন্ধ বলতেছে এখন। ভাড়া নেয়ার পূর্বে তো বলে না ফেরি বন্ধ। এছাড়া এর আগে লকডাউনে নৌযান বন্ধ এমন ঘোষণা থাকার পরও কিন্তু নৌযান চলেছে, হাজার হাজার যাত্রী এই ভরসায় পন্টুনে ভিড় করছে।’
শিবচরের খানকান্দি গ্রামের নেওয়াজ আহমেদ নঈম চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকায় যাওয়ার জন্য সকালে ঘাটে যাই। অনেক যাত্রীরা ঘাটে ভিড় করে। ভাড়া দিয়ে ফেরিতে উঠে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে আসি।'
তিনি আরও বলেন, ‘ফেরি চলবে না তারপরও টিকিট তো ঠিকই কাটছে। টিকিট কাটায় আমরা ভাবছি ফেরি ছাড়বে।’
বিআইডব্লিউটিসির মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী বলেন, ‘পদ্মা উত্তাল থাকায় ভোর থেকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
ফেরি বন্ধ থাকার পরও টিকিট কেটে যাত্রীদের কেন ফেরিতে উঠানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পুলিশকে জানানো হবে।’
বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঘাট ইজারা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। ফেরি বন্ধ থাকার পরও কেন টিকিট কাটছে এটা তারাই বলতে পারবে। তারপরও আমি খোঁজ নিচ্ছি।’
একেএম নাসির/এসজে/জেআইএম