পাকা আমের গন্ধে চিড়া কুটার ধুম
চলছে মধু মাস। পাকা আমের মিষ্টি গন্ধে মৌ মৌ করছে বাগান এলাকা। এরই মধ্যে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার গ্রামগঞ্জে চলছে চিড়া কুটার ধুম।
গৃহস্থ বাড়ি থেকে শুরু করে সবখানে এখন আম আর চিড়া মাখা ষোলআনা বাঙালি পরিবেশ। আসবে মেয়ে জামাই, আসবে আত্মীয়-স্বজন। আম আর চিড়া পৌঁছে যাবে দূর-দূরান্তে কুটুম বাড়িতে।
আম পাকার এমন আয়োজনকে সামনে রেখে নলডাঙ্গার চেউখালী ঝোপদুয়ার গ্রামের কালিমন্দিরের সামনে চিড়া কুটার মিল বসিয়েছেন বাচ্চু মিয়া। এসএসসি পাস ছেলে আর এক সহযোগীকে নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে চিড়া কুটার কর্মযজ্ঞ।
বাচ্চু মিয়া জানান, নাটোর ও নওগাঁর বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ২৫ বছর ধরে তিনি চিড়া কুটার ব্যবসা করছেন। আম পাকার এ সময় প্রতি বছরই চিড়া কুটা তার এক নেশায় পরিণত হয়েছে।
মধু মাসে আমের গন্ধে চিড়া কুটার এমন মহাব্যস্ততা দেখে নলডাঙ্গা শহীদ নাজমুল হক সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ তোতা অনেকটা কাব্যিক ভাষায় বলেন, ‘মধু মাসে আশেপাশে আমের মিষ্টি গন্ধ, চিড়া কুটার ধুম চলেছে এ যে বাংলা সংস্কৃতির চিরচেনা এক ছন্দ। মেয়ে জামাই আসবে বাড়িতে চলছে আয়োজন। বেয়াই-বেয়ান তারাও আসবে। হবে আম চিড়াতে আপ্যায়ন।’
মামুনুর রশীদ তোতা আরও বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন নলডাঙ্গার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে মা-বোনেরা ঢেঁকি দিয়ে চিড়া কুটতো। সেই চিড়ার যে স্বাদ ছিল, বর্তমানে মেশিনে কুটা চিড়ায় সেই স্বাদ আর পাওয়া যায় না।’
মেশিনে চিড়া কুটার এমন দৃশ্য দেখে পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত প্রায় ঢেঁকি। এর বিকল্প এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি।’
মেশিনে চিড়া কুটার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রেজাউল করিম রেজা/জেডএইচ/এমএস