ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : সাতক্ষীরায় প্রস্তুত ১৬৪৫ আশ্রয়কেন্দ্র
বাংলাদেশ উপকূলে আগামী মঙ্গলবারের (২৫ মে) পর ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আঘাত হানতে পারে। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচাতে ১৪৫টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারসহ মোট ১ হাজার ৬৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক ও শতাধিক মেডিকেল টিম। মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য পর্যাপ্ত নৌযান, যানবাহন ও উদ্ধার সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা বাবলু রেজা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় শনিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছর একই সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। এছাড়া করোনা সংক্রমণ রোধে আশ্রয়কেন্দ্রের সক্ষমতার অর্ধেক মানুষকে একটি কেন্দ্রে রাখা হবে। একইসঙ্গে সাত উপজেলার প্রতি উপজেলায় পাঁচটি ও ৭৮টি ইউনিয়নে একটি করে মোট ১১৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার, অর্থ, চাল-ডাল প্রস্তুত রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে জেলার সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধের অধিকাংশ জায়গা এখনো সম্পূর্ণভাবে সংস্কার হয়নি। ফলে নতুন করে ঘূর্ণিঝড় এলে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা উপকূলবাসীর।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, জেলার শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া, দূর্গাবাটি; আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়াঘাট, প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের একাধিক পয়েন্টে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার বলছেন, আম্পানে ভেঙে যাওয়া অধিকাংশ বাঁধের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। কিছু এলাকায় কাজ চলমান আছে।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ঝড়ের সময় জোয়ারের পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি না পেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে অতিরিক্ত পানির চাপ থাকলে কিছু পয়েন্ট ভেঙে প্লাবিত হতে পারে। আমারা সেই পয়েন্টগুলো জরুরিভাবে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি। পর্যাপ্ত জনবল প্রস্তুত রাখা হয়েছে যাতে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী কোনো স্থানে বাঁধ ভেঙে গেলে তাৎক্ষণিক সেটা মেরামত করা যায়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ফায়ার সার্ভিস, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টিতে যেন কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে সব ধরনের চেষ্টা ও প্রস্তুতি থাকবে।
আহসানুর রহমান রাজীব/এমআরআর/এমএস