ছুটে গিয়ে জবাই থেকে রক্ষা পেল দুই নীলগাই
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেউলাবাড়ি ইউনিয়নে দুইটি নীলগাইয়ের বিচরণে স্থানীয়দের মাঝে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণী দুটিকে দেখার জন্য উৎসুক জনতা ভিড় করছেন।
সোমবার (১০ মে) বিকেলে মধুপুর উপজেলার লাউফুলা গ্রামের লোকজন নীলগাই দুটিকে বন থেকে আটক করেছে বলে সবশেষ খবরে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের চেড়াভাঙ্গা সংলগ্ন পাহাড়ের টিলার ওপর কয়েকজন শিশু খেলতে গিয়ে নীলগাই প্রথমে দেখতে পায়। তারা বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি অভিভাবকদের জানায়। অভিভাবকরা প্রথমে বিশ্বাস না করলেও নিজেরা দেখার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের বাঘেরহাট নচিয়া মামুদপুর গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী ওষুধ ব্যবসায়ী মো. খাইরুল ইসলাম, হাফিজুর, বোরহান এবং ফুলহারা গ্রামের মশিউর রহমান বাবর, পর্ব আহম্মেদ, শাজাহান খানসহ অনেকেই জানান, গত দুইদিন ধরে নীলগাই দুটি চেড়াভাঙ্গা সংলগ্ন পাহাড়ের টিলায় বিচরণ করছে। উৎসুক মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রাণী দুটি এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে।
সবশেষ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জানা যায়, মধুপুর বনাঞ্চলের লাউফুলা এলাকা থেকে বিকেলে স্থানীয় লোকজন নীলগাই দুটিকে আটক করেছেন।
ঘাটাইলের দেউলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খান জানান, তিনি জানতে পেরেছেন দুইদিন ধরে দুটি নীলগাই স্থানীয় টিলায় বিচরণ করছে। প্রতারক কিছু মানুষ প্রাণী দুটিকে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে জবাই করে গোস্ত (মাংস) বিক্রি করার উদ্দেশ্যে চোরাই পথে ঘাটাইলের পাহাড়ি অঞ্চলে এনে বেঁধে রেখেছিল বলে তিনি জানতে পেরেছেন। সেখান থেকে বাঁধন ছিঁড়ে লোকালয়ে চলে এসেছে।
নীলগাই দুটিকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রাণিসম্পদ ও বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই চেয়ারম্যান।
মধুপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ জানান, ধরা পড়া প্রাণীটি দুটি নীলগাই নিশ্চিত হওয়ার পর প্রাণহানি রোধে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। পরে বনকর্মীরা সেখানে হাজির হন।
মধুপুর বনাঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক জামাল হোসেন তালুকদার জানান, এটি ভারতীয় নীলগাই। এক বছর আগে সীমান্ত পেরিয়ে দিনাজপুর এলাকায় ধরা পড়ে। পরবর্তীতে প্রাণীটি গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি সাফারি পার্ক থেকে নীলগাইটি পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, জেলার সখীপুর গজারি বনে থাকার সময় সাফারি পার্কের কর্মীরা ট্রাঙ্কুলাইজাইরে চেষ্টা করে নীলগাইটি ধরতে ব্যর্থ হন। বর্তমানে প্রাণীটি দুটি সুস্থ রয়েছে। গাজীপুর সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীন জানান, স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপের জন্য বিরল প্রজাতির প্রাণী দুটির প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
আরিফ উর রহমান টগর/এসআর/জিকেএস