খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে বানর
করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় চলছে সরকার নির্দেশিত লকডাউন। এ অবস্থায় অবরুদ্ধ সাধারণ মানুষ। অনিশ্চয়তার প্রতিটি দিন কষ্টকর হয় যখন খাদ্য সংকট দেখা দেয়। নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে জনমনে। এমন সময়ে ভালো নেই বন্য প্রাণীগুলোও।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বানরের সংখ্যা একেবারেই শূণ্যের কোঠায়। যাও দু’একটা আছে তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রতিদিন চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার ওপর করোনকালীন সময়ে খাদ্য সংকটে পড়েছে প্রাণিগুলো।
খাদ্যের সন্ধানে মানুষের কাছাকাছি ঘেষার চেষ্টাও করছে। যদি কেউ খাদ্য দিয়ে সহায়তা করে এ আশায়।
কালীগঞ্জের পৌর এলাকার পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কাছেই এ বানরটিকে দেখা যায়। বর্তমান হা-মীম গ্রুপের (সাবেক মসলিন কটন মিলস) রিফাত পোশাক কারখানার ভেতরে থাকলেও খাদ্যের সন্ধানে এখন এটি লোকালয়ে এসে হাজির হচ্ছে।
দেখেই বুঝা যায় শরীর অনেকটাই ভেঙে পড়েছে। আর তাই স্থানীয় লোকজনও সাধ্যমতো খাদ্য দিয়ে প্রাণীটির জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
মসলিস কটস মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বানরটি একা বসে আসে আছে। প্রতিবেদককে দেখে দৌড়ে কিছুটা সামনে চলে এসেছে খাবার পাওয়ার আশায়। একটি বনরুটি দেয়া হয় এটিকে। বনরুটিটি পেয়ে চলে যায় বানরটি।
ভাদার্ত্তী দক্ষিণপাড়া গ্রামের এলাকার মো. নুরুল ইসলাম (৩৬) বলেন, বানরটি কোথা থেকে এসেছে তা জানা যায়নি। তবে দীর্ঘদিন ধরে হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানার ভেতরেই আছে। লকডাউনে সব বন্ধ থাকায় এটি খাদ্য সংকটে পড়েছে। এখন আমাদের বাড়ি যেহেতু ফ্যাক্টরি লাগোয়া তাই ওয়াল টপকে খাবারের উদ্দেশ্যে চলে আসে।
তিনি আর বলেন, আমরা এটিকে বাদাম, কলা দেই খেতে। এতে প্রাণীটি যেমন ভালো থাকে, সন্তানরাও বানর দেখে আনন্দ উপভোগ করে।
একই এলাকার দোকানি মো. খাজা মিয়া (৪০) বলেন, হঠাৎ করেই কয়েকদিন ধরে বানরটি ফ্যাক্টরির ওয়াল টপকে দোকানের কাছে এসে বসে থাকে। যখন কোনো ক্রেতা আসে তার ফেলে দেয়া অতিরিক্ত খাবার এটি নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, অনেকে ইচ্ছে করেও খাবার দিয়ে যায়। আর মানুষও এ বানরটিকে আদর করে কাছে রাখার চেষ্টা করে।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ মসলিস কটস মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার দাস বলেন, মাঝে মাঝে বানরটি স্কুলের দোতলার বারান্দায় চলে আসে। চেষ্টা করি কিছু খাবার দিতে। খাবার শেষ করে আবার চলে যায়। কয়েকদিন পরে আবার আসে।
তবে এটি কারো কোনো ক্ষতি করে না বলেও জানান তিনি।
আব্দুর রহমান আরমান/এসএমএম/জেআইএম