নকলায় পাওনাদারের চাপে ঠিকাদারের আত্মহত্যা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০১:১৯ পিএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৫

শেরপুরের নকলায় পাওনাদারের চাপে  রোকনুজ্জামান বাহাদুর (৪৪) নামে এক ঠিকাদার আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর হাসপাতাল পাঠিয়েছে। বাহাদুর নকলা শহরের কুর্শাবাদাগৈড় এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

ঠিকাদারি করতে গিয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন বলে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।
 
এদিকে, ওই ঠিকাদারের লাশ উদ্ধারের খবর শুনে পাওনাদারদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা পাওনা টাকা আদায়ের ব্যাপারে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আত্মহত্যার খবর শুনে পাওনাদারদের অনেকেই তার বাড়িতে গিয়েও হাজির হন।
 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেসার্স ফারিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে রোকনুজ্জামান বাহাদুর ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন। বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে তিনি বেশ কয়েকটি বড় বড় ঠিকাদারি কাজ করে মোটা অংকের টকা কামাই করেন। কিন্তু ভোগাই নদীর ওপর রাবার ড্যামসহ কয়েকটি বড় মাপের কাজ করতে গিয়ে তিনি ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েন। সময়মতো ঋণদাতাদের ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় তার ওপর চাপ বাড়তে থাকে। ঋণদাতাদের চাপ সামলাতে না পেরে একপর্যায়ে নকলা শহরের বাসা ছেড়ে স্ত্রীকে নিয়ে জামালপুর শহরের বাসায় থাকতে শুরু করেন। ঋণদাতাদের কয়েকজন পাওনা টাকা উত্তোলনের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দরখাস্ত দিলে পরিবার থেকে তার ওপর চাপ বাড়তে থাকে। এরই একপর্যায়ে শুক্রবার রাতে জামালপুরের বাসা থেকে নকলার বাসায় আসেন এবং শনিবার সকালে নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার ভোরে ঘুম থেকে ওঠে ঠিকাদার বাহাদুর কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়িয়েছেন। সকাল নয়টার দিকে তার মা কক্ষের বাইরে থেকে নাস্তা করার জন্য তাকে ডাকাডাকি করেন। এসময় দরজা ভেজানো ছিল। ছোট ভাইয়ের স্ত্রীও ডাকাডাকির একপর্যায়ে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দিলে সেটি খুলে যায় এবং ফ্যানের সঙ্গে বাহাদুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। ঘটনাটি থানায় জানানো হলে নকলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নকলা উপজেলার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান লিটন জানান, এক ছেলে এক মেয়ের জনক রোকনুজ্জামান বাহার অনেক বড় বড় ঠিকাদারি কাজ করেছে। কিন্তু তার অনেক ঋণের কথাও শোনা যায়। এসব ঋণের জন্য তার ওপর চাপও ছিলো।

এ ব্যাপারে নকলা থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, রোকনুজ্জামান বাহাদুরের ফাঁসিতে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে আনা হয়েছে। শুনেছি মার্কেটে তার অনেক পাওনাদার রয়েছে। তার কাছে অনেকেই টাকা পায়। পাওনা টাকার চিন্তায় তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

হাকিম বাবুল/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।