লকডাউনে শ্রমিক সংকটে দিশেহারা কৃষক
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এখন ধান কাটার মৌসুম। উপজেলার সকল ফসলের মাঠজুড়ে পাকা সোনালী ধানের মো মো গন্ধ। পুরো ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে কৃষকরা এখন সেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত। পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাবে মাঠেই ঝরে পড়ছে কৃষকের সোনালী ধান।
সারাদেশ কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ, সেইসাথে মৃত্যু সংখ্যা। সরকার সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের আওতায় নিয়ে এসেছে পুরো দেশ। কঠোর লকডাউনে গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। আর তাই উত্তরবঙ্গ থেকে ধান কাটার কোনো শ্রমিক এই অঞ্চলে আসতে পারছে না। ফলে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।
উপজেলার বিল বেলাই, ভাটিরা বিল এবং আশপাশের ধানি জমি ঘুরে দেখা যায়, ধান পেকে কাটার উপযোগী হলেও তা এখনও মাঠে দোল খাচ্ছে। কিছুদিন আগে গরম বাতাস এবং ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ ছিল তুলনামূলক কম। কিন্তু এই মুহূর্তে ধানগুলো কাটতে না পারলে ঝড় এবং জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক মো. মিরাজ (৪০) জানান, গত বছরও এই সময়টাতে লকডাউনের কারণে ধান কাটার শ্রমিক আসতে পারেনি। ফলে বিঘা প্রতি প্রায় দশ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে ধান কাটার জন্য। এলাকার কৃষকরা গ্রুপ করে একজন আরেকজনের ধান কেটে দিয়েছে। এবারও একইভাবে ধান কাটতে হবে, দেরি হলে সামান্য ঝড়েই ধান মাটিতে পড়ে যাবে। এই শঙ্কায় তাড়াহুড়ো করে ধান কাটতে গিয়ে ধান গাছের খড় আনতে পারছেন না। ফলে গবাদি পশুর খাবার নিয়েও থাকতে হচ্ছে চিন্তায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, কৃষি শ্রমিকদের গণপরিবহনে কোনো বাধা নেই। সরকারি নির্দেশনায় স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে তারা চাইলে কাজের জন্য যেকোনো স্থানে যেতে পারেন। এখন কেউ যদি না আসে তাহলে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।
তবে ধান কাটার ভর্তুকির ব্যাপারে সরকারি কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
আব্দুর রহমান আরমান/এফএ/জেআইএম