ব্রিজের রড নিজেই বিক্রি করে দিয়েছেন ঠিকাদার!
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুতাং বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সুতাং ব্রিজটি বিগত প্রায় দশ বছর ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। গত বছর পৌনে পাঁচ কোটি টাকার টেন্ডারে নির্মাণ কাজ শুরু হলে করোনার প্রভাবে থমকে যায় কাজ। পরে চলতি বছরের শুরু থেকে ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয়। প্রথমে ধীরগতিতে কাজ হলেও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নির্মাণ কাজে গতি ফেরে৷
প্রথমে ঠিকাদার শ্রমিক দিয়ে হাতুড়ির সাহায্যে ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু করেন। মাস দেড়েক এভাবে কাজ করার পর ঢাকা থেকে বুলডোজার এনে ব্রিজ পুরোপুরি ভাঙার কাজ শেষ করেছেন। মোটামুটি ভালো গতিতে কাজ চলতে না চলতেই এবার ঠিকাদারের বিরুদ্ধে পুরাতন ব্রিজের রড বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর প্রায় ৭ টন রড বিক্রির পায়তারা করার সময় আটক করেছে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদার জানান, তিনি ঢাকা থেকে একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে বুলডোজার এনেছেন। চুক্তি অনুযায়ী, যারা ব্রিজ ভেঙে দেবে তারাই অবশিষ্ট ইট, পাথর ও রড নিয়ে যাবে। এছাড়াও তাদের সাথে অবিশিষ্ট চুক্তির টাকাতো আছেই।
হবিগঞ্জ এলজিইডি অফিস থেকে পুরাতন রডের দুই লাখ ৯২ হাজার টাকার একটি ইস্টিমেট দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার গোলাম ফারুক উচ্ছিষ্ট মালামাল নিলামে না তুলে লুকিয়ে বিক্রি করে ফেলছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সরকারি মালামাল কিভাবে ঠিকাদার বিক্রি করে দিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
এ বিষয়ে প্রকল্পের (এসও) উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. মাজেদুল ইসলাম জানান, ঠিকাদার কিভাবে ব্রিজের মালামাল নিলামে না তুলে নিজেই বিক্রি করেছেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। আমরা ব্রিজের রডের একটি ইস্টিমেট ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এ ব্যাপারে অনিয়ম হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় অধিদফতর (এলজিইডি) শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলী মো. ফারুকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব বলেন, স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুতাং পুরাতন ব্রিজের রডবোঝাই ট্রাক আটক করে থানায় নিয়ে আসি। প্রকল্পের ঠিকাদার ও প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে কাগজপত্র নিয়ে আসতে।
কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এফএ/এমএস