নরসিংদীতে আ. লীগের প্রার্থী নিশ্চিত, নীরব বিএনপি


প্রকাশিত: ১২:১১ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০১৫

আসন্ন নরসিংদী পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও প্রার্থীরা। ভোটাররাও হিসেব নিকেশ কষে ফেলছেন। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোটামুটি ঠিক হলেও প্রার্থী মনোনয়নে নীরব রয়েছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী নরসিংদীর প্রয়াত জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেনের ভাই বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। প্রতিদ্ধন্দ্বিতায় নেমেছেন লোকমানেরই হাতে গড়া স্নেহধন্য রাজনৈতিক শিষ্য সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এসএম কাইয়ুম। দুজনই সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় পৌর নির্বাচনী মাঠে চলছে ভাই আর শিষ্যের ঠান্ডা লড়াই। এই ঠান্ডা লড়াই যেকোনো মুহূর্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠার আশঙ্কাও করছেন অনেক ভোটার।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীও বর্তমান মেয়র কামরুলকেই আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সরকারি দল থেকে একাধিক প্রার্থীর নাম উঠে এসেছে। শেষ পর্যন্ত কে মাঠে লড়বে সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সবাই।

অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থীদের এখনও প্রচার প্রচারণায় দেখা যায়নি। পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনও নীরব ভূমিকা পালন করছেন  বিএনপি নেতাকর্মীরা। এক প্রকার নীরবইে প্রস্তুতি সারছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে যোগ্য প্রার্থীকে মনোয়ন দিয়ে মেয়রের আসনটি ছিনিয়ে আনতে চান বিএনপি। এমনটাই জানালেন দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে এ পর্যন্ত কোনো পদপ্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।  

দলীয় মনোয়ন মোটামুটি নিশ্চিত তাই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল। তিনি ও তার সমর্থকরা নানা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে অসম্পন্ন কাজ শেষ করার জন্য ভোটারদের কাছে সহযোগিতা চাইছেন। বিপরীতে মনোয়ন পাওয়ার চেষ্টায় আছেন প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের শিষ্য এসএম কাইয়ুম। লোকমান হোসেন নিহত হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে তার ছোট ভাই কামরুজ্জামান কামরুলকে মেয়র নির্বাচিত করতে কাইয়ুম দিনরাত এক করেছেন বলেও জানান। কিন্তু প্রয়াত মেয়র লোকমান হেসেনের এক সময়ের রাজনৈতিক শিষ্য হিসেবে এবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম কাইয়ুম লোকমানের যোগ্য উত্তরসরি দাবি করে মেয়র পদে মনোনয়ন চাইবেন তিনি।

তার এক সমর্থক নির্বাচন কার্যালয় থেকে কাইযুমের মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন বলে জনান। এক সময় ছাত্র রাজনীতি করে জনপ্রিয়তা পাওয়া এসএম কাইয়ুম প্রয়াত লোকমানের হাত ধরে শ্রমিকদের জনপ্রিয়তাও অর্জন করেন। প্রয়াত জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেনের স্নেহধন্য হওয়ায় লোকমান ভক্তদের কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে ।  

অন্যদিকে শহর যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল সরকার রয়েছেন আলোচনায়। কিন্তু লোকমান হোসেন হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় নেতিবাচক অবস্থা কাটিয়ে তিনি বর্তমান লোকমান রাজত্বে কতখানি এগুতে পারেন সেদিকেও তাকিয়ে আছেন অধিকাংশ ভোটার। সাবেক দাপুটে পৌর চেয়ারম্যান মতিন সরকারের ছোট ভাই হলেও লোকমান হত্যাকাণ্ডই তার জন্য সমস্যা বলে দেখছেন অনেকে। এছাড়া লোকমান হোসেনের বন্ধু আক্তারুজ্জামানও মেয়র পদে লড়াই করার জন্য লবিং তদবির করছে।
 
অন্যদিকে বিএনপিতে রয়েছে মামলা হামলার ভয়। তাই মেয়র নির্বাচনকে সামনে রেখে নীরব প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলেও আগে থেকেই নিজেদের ইচ্ছার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করছেন না অনেকেই। এছাড়া ক্ষমতাসীনদের অপকৌশলের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় নীরবেই সারছেন প্রস্ততি।

বিএনপি থেকে নির্বাচন  করার সম্ভাবনা রয়েছে শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবীর কামাল, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম এবং সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ওসমান মোল্লা। তুখোড় ছাত্রনেতা থেকে এখন বিএনপির দাপুটে নেতা গোলাম কবীর কামাল। জেলা বিএনপির রাজনীতির নীতি নির্ধারক নেতাদের সারিতে রয়েছেন তিনি। তবে ব্যক্তি ইমেজ নয় বিএনপির জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েই বাজিমাৎ করতে চায় জেলা বিএনপির নেতারা।

 জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবীর খোকন বলেন, যোগ্য ব্যক্তিকেই প্রার্থী করার চেষ্টা চলছে। তবে দুই এক দিনের মধ্যেই মেয়র প্রার্থী মনোনীত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।