ভুল আসামির মুক্তি : সেই লিটন ফরাজী গ্রেফতার
শরীয়তপুর জেলা কারাগার থেকে লিটন সিকদারের বদলে জামিনে ছেড়ে দেয়া হয় লিটন ফরাজী (২৮) নামের আরেক আসামিকে। কারাগার থেকে জামিনে ছেড়ে দেয়া সেই লিটন ফরাজীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১০ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে ঢাকার রামপুরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রোববার (১১ এপ্রিল) শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় তাকে আনা হয়েছে।
গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন পালং মডেল থানার নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আক্তার হোসেন।
এ ঘটনার আজ দুপুরে শরীয়তপুর কারাগারের নতুন ডেপুটি জেলার মো. আব্দুস সেলিম বাদী হয়ে লিটন ফরাজীর বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শরীয়তপুর জেলা কারাগার সূত্র জানায়, গোসাইরহাট থানার একটি চুরির ঘটনার মামলার আসামি লিটন ফরাজি ও লিটন সিকদার। তারা দুজন রাজবাড়ী ও খুলনার দুটি মামলারও আসামি।
লিটন ফরাজি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দামুরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। আর লিটন সিকদার খুলনার খালিশপুরের বাসিন্দা। গত ১১ মার্চ তাদের শরীয়তপুর জেলা কারাগারে আনা হয়।
গত ৪ এপ্রিল শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে গোসাইরহাট থানার ওই মামলায় তাদের জামিন দেয়া হয়। আর খুলনা ও রাজবাড়ীর মামলায় লিটন সিকদার জামিনে থাকলেও লিটন ফরাজি জামিনে ছিলেন না। আদালত থেকে ওই জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছালে কারা কর্তৃপক্ষ লিটন সিকদারকে না ছেড়ে লিটন ফরাজিকে সন্ধ্যায় মুক্তি দেয়। লিটন সিকদারকে আটক রাখা হয়।
লিটন সিকদারের স্বজনেরা বিষয়টি নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন তাদের নজরে আসে নামের ভুলে লিটন ফরাজি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। পরে ৫ এপ্রিল রাতে লিটন সিকদারকে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ৫ এপ্রিল পালং মডেল থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন শরীয়তপুর কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আমিরুল ইসলাম। পরে ৬ এপ্রিল দুপুরে কারারক্ষী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষকে জানান শরীয়তপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার গোলাম হোসেন। কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি তদন্তের জন্য বরিশাল বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন।
৬ এপ্রিল তারা শরীয়তপুর জেলা কারাগার পরিদর্শন করে ঘটনাটির তদন্ত করেন। ৭ এপ্রিল কারা মহাপরিদর্শক মোমিনুর রহমান ডেপুটি জেলার হোসেনুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। আর কারাগারের জেলার আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করেন। তাকে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপ-মহাপরিদর্শকের দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ছগির হোসেন/এফএ/এমএস