লকডাউনে রাজশাহী ছাড়ছে মানুষ, বাস-রেল স্টেশনে উপচে পড়া ভিড়
সারাদেশে ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ লকডাউনের কারণে শনিবার (৩ এপ্রিল) থেকেই রাজশাহী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ।
রোববার (৪ এপ্রিল) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লকডাউনে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড় সবজায়গায়। তবে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি।
নগরীর রেলগেটে সিএনজি স্ট্যান্ডে দুপুরে দেখা গেছে, বাস স্টপগুলোতে যাত্রীদের বাড়তি চাপ। রাজশাহী-নওগাঁসহ অন্যান্য জেলা ও আন্তঃজেলা রুটের অধিকাংশ বাস রেলগেট থেকে ছেড়ে গেছে।
এছাড়াও এখানে রয়েছে সিএনজি স্ট্যান্ড। সেখানে কাউকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র ট্রাফিক নির্দেশনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত কোনো তৎপরতাই চোখে পড়েনি।
সরকার নির্দেশনা অনুযায়ী, অর্ধেক বাস ফাঁকা রেখে যাত্রী নেয়ার কথা ছিল। কিছু কিছু বাস এ নিয়ম পালন করলেও অধিকাংশ বাসেই অতিরিক্ত যাত্রী তোলার অভিযোগ মিলেছে। সেই সঙ্গে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। তবে এ নিয়ে কথা বলতে চাননি সেখানকার বাস কাউন্টার মাস্টাররা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাশেদ শুভ্র বলেন, ‘ক্যাম্পাসে গবেষণার কিছু কাজ করতে হচ্ছে। তাই রাজশাহীতে ছিলাম। কিন্তু লকডাউন হওয়ায় রাজশাহীতে আর থাকা সম্ভব নয়। তাই বাড়ি ফিরছি। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি প্রচণ্ড ভিড়। কিন্তু উপায় নেই, বাড়ি ফিরতেই হবে।’
সরকারি নির্দেশনায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অফিস-আদালত। তাই এই সুযোগে নওগাঁয় নিজের বাড়ি ফিরছেন রাজশাহী কোর্টের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান মল্লিক। তিনি বলেন, ‘সোমবার থেকে লকডাউন। আপাতত এক সপ্তাহ লকডাউনের কথা শোনা গেলেও তা বাড়তে পারে। তাই আগেভাগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি।’
এদিকে রোববার থেকেই বন্ধ হবে ট্রেন চলাচল। স্টেশনেও দেখা গেছে অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড়।
রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলছেন, ‘করোনার কারণে অর্ধেক যাত্রীর টিকিট দেয়ার নিয়ম হয়েছে। তাই আগের চাইতে স্টেশনে যাত্রী তেমন নেই। তবে অনেকেই টিকিটের আশায় স্টেশনে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ’
বাস স্ট্যান্ডগুলোতে বাড়তি চাপ, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে রাজশাহীর অতরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, ‘গত বছরের লকডাউনে মানুষ যতটা সচেতন ছিল, এবার সেই সচেতনতা মানুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে না। তবুও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে যতটা সম্ভব সচেতন করার চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ে আইন প্রয়োগ করছি। এমনকি নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করছি’।
গণপরবিহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু বাস দেখেছি যেগুলো নিয়ম মেনে চলাচল করছে। আর যারা মানছেন না তাদের বিষয়ে বাস মালিক ও চালকদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
এদিকে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার) ১৪২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ দিনে বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৩০ জন।
এসএমএম/জিকেএস