শিশু সাইদ হত্যা : চতুর্থ দিনে ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ


প্রকাশিত: ১২:২৮ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০১৫

সিলেটে শিশু আবু সাঈদ হত্যা মামলায় টানা চতুর্থ দিনে আদালতে আরো চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে চাঞ্চল্যকর সাঈদ হত্যা মামলায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুর রশিদ এ সাক্ষ্যগ্রহণ গ্রহণ করেন।

সাক্ষ্যপ্রদান করেন, সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাহেদুল করিম, মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক ফারহানা ইয়াসমিন, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শামীম হোসেন পীর ও জকিগঞ্জ থানার এসআই জহর লাল।

বুধবার আরো পাচঁজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই মামলার কার্যক্রম শেষ করার জন্য আদালতে আবেদন করবে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে এ মাসেই রায় ঘোষণার আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

এর আগে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ উপলক্ষ্যে সকালে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। আসামি এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল (বরখাস্তকৃত) এবাদুর রহমান পুতুল, সিলেট জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মুহিবুর রহমান ওরফে মহি হোসেন মাছুম এবং র্যাব ও পুলিশের কথিত সোর্স আতাউর রহমান গেদাকে।

সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. আব্দুল মালেক জাগো নিউজকে জানান, বুধবার আরো পাঁচজনের সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে এ মামলার কার্যক্রম শেষ করতে আদালতে আবেদন করা হবে। আর এ কারণে চলতি মাসেই চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করতে পারেন বিচারক।

প্রিজন ভ্যানে হত্যা মামলার আসামিদের `জয় বাংলা` স্লোগান : দুপুরে আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রিজন ভ্যানে করে চার আসামিকে আদালত থেকে কারাগারে নেয়া হচ্ছিল। এ সময় ভ্যানের ভেতর থেকে হঠাৎ করে `জয় বাংলা` বলে স্লোগান শুরু করে আসামিরা। স্লোগান শুনে ভ্যানের আশপাশে জড়ো হতে থাকে সাধারণ মানুষ।

আলোচিত এই শিশু হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুল, র্যাবের সোর্স আতাউর রহমান গেদা, সিলেট জেলা ওলামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম রাকিব ও প্রচার সম্পাদক মাহিবুর রহমান ওরফে মাসুমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ চলছে।

এর গত ১৯ নভেম্বর থেকে টানা সাক্ষ্যগ্রহণ করা হচ্ছে। মামলার মোট ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হলো। গত ১৭ নভেম্বর পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রশীদ।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাহেদুল করিম চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নথিপত্র স্থানান্তর করেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী। এর আগের দিন ২২ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মোশাররফ হোসাইন এসি প্রসিকিউশনের কাছে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হস্তান্তর করেন।
 
গত ১১ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর রায়নগর থেকে স্কুলছাত্র আবু সাঈদকে (৯) অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ১৩ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ কনস্টেবল এবাদুর রহমান পুতুলের কুমারপাড়াস্থ ঝরনারপাড় সবুজ-৩৭ বাসার ছাদের চিলেকোঠা একটি ঘর থেকে আবু সাঈদের অর্ধগলিত মরদেহ সাতটি পলিথিনের বস্তার মধ্যে মোড়ানো অবস্থায়  উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল এবাদুর, পুলিশের সোর্স গেদা ও ওলামা লীগ নেতা রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর এই তিনজনই ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

নিহত আবু সাঈদ নগরের রায়নগর শাহমীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ও রায়নগর দর্জিবন্দ বসুন্ধরা ৭৪ নম্বর বাসার আব্দুল মতিনের ছেলে। মতিনের গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার খাশিলা গ্রামে।

ছামির মাহমুদ/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।