৩ বছর ধরে কাঁটাতারের বেড়ায় বন্দি ১৫ পরিবার
যাতায়াতের রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের রবি দাস সম্প্রদায়ের ১৫টি পরিবার। ফলে তিন বছর ধরে অন্যের বাড়ির দেয়াল টপকে যাতায়াত করতে হয় তাদের। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে অচিরেই ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, ৩০ বছর যাবত রবিদাস সম্প্রদায়ের লোকজন মূল সড়কে উঠতে ওই রাস্তা ব্যবহার করে আসছিলেন। কিন্তু তিন বছর আগে রাস্তার জায়গার মালিক আব্দুস সালাম একই গ্রামের হাবিবুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেন। জমি কেনার পরই হাবিবুর রহমান কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন। এতে রবি দাস সম্প্রদায়ের বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে শ্রী জয় রবিদাস বলেন, ‘চলাচলের রাস্তার দাবিতে আমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করলে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু হাবিবুর রহমান তার কথা শুনেননি। এখন আপনারা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।’
শ্রী কামাল রবিদাস চলাচলে রাস্তার দাবি করে বলেন, ‘আমরা প্রায় তিন বছর প্রতিবেশী সুমন মিয়ার দেয়াল টপকে চলাচল করেছি। এখন তার প্রয়োজনে ঘর তৈরি করছেন। তার ঘর তোলা শেষ হলে আমাদের ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা থাকবে না। প্রশাসনের কাছে দাবি তাড়াতাড়ি যেন আমাদের সমস্যার সমাধান করে দেয়।’
এ বিষয়ে প্রতিবেশী শহিদুল্লাহ বলেন, ‘রবিদাস সম্প্রদায়ের চলাফেরা জন্য ৩০ বছর আগে আমরাই যাতায়াতের রাস্তা করে দিয়েছিলাম। তবে, হাবিবুর পুকুরের মাছ চুরি ঠেকাতে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।’
এ বিষয়ে প্রতিবেশী সুমন মিয়া বলেন, ‘রবিদাস সম্প্রদায়ের লোকজন আমার বাড়ির দেয়াল টপকে যাতায়াত করতেন। আমারদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আরও একটি ঘর তৈরির প্রয়োজন হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই রবিদাস সম্প্রদায়ের যাতায়াতের জায়গায় ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। ঘর তৈরি শেষ হলে তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা থাকবে না।’
এ বিষয়ে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হাবিবুর রহমান বলেন, ‘যাতায়াতের রাস্তার জায়গাটি আমার নিজের। এছাড়া ওই জায়গায় পুকুর আছে। পুকুরের মাছ চুরি হওয়ার কারণে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, অভিযোগটি পাওয়ার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানকে মীমাংসা করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। তবে, অচিরেই সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসজে/এএসএম