গৃহবধূকে লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ২২ মার্চ ২০২১
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার (গোলাপি রংয়ের পোশাক পরিহিত)। ছবি-ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে যৌতুকের মামলা তুলে না নেয়ায় ইয়াসমিন আক্তার (২৩) নামের এক গৃহবধূকে প্রকাশ্য লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।

গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

গত ১০ মার্চ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে, সম্প্রতি মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

রোববার (২১ মার্চ) ভুক্তভোগী গৃহবধূর বড় ভাই মাহবুব আলমের ফেসবুক আইডি থেকে ‘হৃদয়ে ঈশ্বরগঞ্জ’ পেজে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়। ১২ সেকেন্ডের ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি ধানক্ষেতের আইলের ওপর গৃহবধূ ইয়াসমিনকে ধরে রেখেছেন দুজন নারী। আর শ্মশ্রুমণ্ডিত এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ফুফা আবুল কালামের ছেলে পাবেল মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় ইয়াসমিন আক্তারের। বিয়ের পর থেকে পাবেল যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছেন। এরই মাঝে যৌতুক না দেয়ায় দুইবার গর্ভপাত করিয়েছেন স্বামী পাবেল ও তার পরিবারের লোকজন। গত বছরের ১ নভেম্বর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবার ইয়াসমিনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসা নেন। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে ৮ নভেম্বর বাদী হয়ে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মো. পাবেল মিয়াকে ১ মার্চ গ্রেফতার করে কারাগারে পুলিশ।

পাবেল মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর তার চাচা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেন। এরই জের ধরে গত ১০ মার্চ তিনি মাঠে ছাগল আনতে গেলে চাচা আনোয়ার মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেয় এবং বলেন, মামলা তুলে না নিলে মারধর করা হবে। তখন ইয়াসমিন আক্তার মামলা তুলে নেবেন না বলতেই চাচাতো ভাই তানভীন আলম, চাচা আনোয়ার হোসেন, চাচাতো বোন তানবিনা আক্তার তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যান। পরে ইয়াসমিনের ভাই তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করেন।

হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে মামলা করেন গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) আহমার উজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরই খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বিষয়টি পারিবারিক। তবে নারীর প্রতি সংহিংসতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ইতোমধ্যেই দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।