বাচ্চা ফুটেছে মদনটাকের
মদনটাক। একসময় দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় এ পাখির দেখা মিললেও কালের বিবর্তনে বিপন্নের পথে। গাজীপুরের শ্রীপুরে সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠার সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকটি মদনটাক এখানে আনা হয়। সেখানে বাচ্চার জন্ম হওয়ায় আশার সঞ্চার হয়েছে বিলুপ্তপ্রায় এ মদনটাক পাখিকে ঘিরে।
সাফারী পার্কে মদনটাকের বাসায় গত মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) ও শুক্রবার (১৯ মার্চ) দুটি বাচ্চা ফুটেছে। নতুন বাচ্চা নিয়ে মদনটাকের বর্তমান সংখ্যা নয়টিকে পৌঁছাল। এর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তিনটি মদনটাকের বাচ্চা জন্ম হয়েছিল এখানে।
সাফারী পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার (বন্যপ্রাণী পরিদর্শক) আনিছুর রহমান বলেন, ‘এ পাখি সাধারণত বড় বিলের কাছে, নদীর মোহনায় বসবাস করে থাকে। তবে আমাদের দেশ ছাড়াও সারাবিশ্বে দেখা মেলা ভার। স্থানীয়ভাবে অনেকেই মদনটাক পাখিকে হারগিলাও বলে থাকে। মদনটাক প্রধানত জলচর পাখি হিসেবে পরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘এরা মাছ, ব্যাঙ, সরীসৃপ এবং অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণী ভক্ষণ করে। প্রজনন মৌসুম ব্যতীত একাকী নিভৃতচারী পাখি হিসেবে এরা পরিচিত। ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এরা বাসা বাঁধে। ডালপালা দিয়ে তৈরি বাসায় স্ত্রী মদনটাক ৩-৪টি পর্যন্ত ডিম দেয়। একমাস পর ডিম থেকে বাচ্চার জন্ম হয়। এরা তেমন কোনো আওয়াজ করে না। এদের ওজন হয় ৫-৭ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।’
আনিছুর রহমান আরও বলেন, ‘মদনটাকের মূল অস্তিত্ব দক্ষিণ এশিয়া জুড়েই। আমাদের দেশে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশে মাঝে-মধ্যে এর দেখা মেলে। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর ও চীন থেকে এরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।’
সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তন, বসবাসের জায়গা নষ্ট, ফুড চেইনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হওয়ায় মদনটাকের অস্তিত্ব আজ বিপন্নের তালিকায়। তবে আমাদের সাফারী পার্কের মদনটাকের ডেরায় তাদের বসবাসের প্রাকৃতিক পরিবেশ তৈরি করায় বাচ্চার জন্ম হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সবার মধ্যেই আশার সঞ্চার হচ্ছে।’
সাফারী পার্কে মদনটাকের ডেরায় এ মৌসুমে একটি স্ত্রী মদনটাক তিনটি ডিম দিয়েছিল তা থেকে দুটি বাচ্চার জন্ম হয়েছে। আমাদের আশা আরও একটি বাচ্চার জন্ম হবে।
আরএইচ/জিকেএস