ঘরেও মশা বাইরেও মশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২১

শীতের প্রকোপ শেষ হতে না হতেই রংপুর নগরীতে শুরু হয়েছে মশার উপদ্রব। মশারি অথবা কয়েল ছাড়া দিনেও ঘরে অবস্থান করা যায় না। দিনের আলো কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। দিন-রাত সমানতালে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ জনজীবন।

নগরীর অভিজাত এলাকাগুলোতে রংপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে মাত্র ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু হলেও প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছায়নি এ সুবিধা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, নগরীর অধিকাংশ এলাকাতেই এখন পর্যন্ত মশা নিধন কার্যক্রম চোখে পড়েনি। আবার ওষুধের কার্যক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

তবে নগর কর্তৃপক্ষ বলছে, মশা নিধনে কার্যকর ভূমিকা অব্যাহত রয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, প্রথম দফায় গত বছরের ১৮ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত নগরীতে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ১০ মার্চ থেকে আবারও মশা নিধন শুরু হয়। ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বাসবভনসহ বিভিন্ন ড্রেনে মশা নিধন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

jagonews24

নগরীর রিকশাচালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, শুধু ড্রেনেই মশা মারা দেখি। অন্য জায়গায় চোখে পড়ে না। দিন-রাত সব সময় মশা কামড় দেয়। মশার কামড়ে কোথাও স্থির থাকা যায় না।

সন্ধ্যা হলেই আড্ডায় জমে ওঠে নগরীর টাউন হল চত্বর। এখানে এসেও শান্তি মতো অবস্থান করতে পারেন না সংস্কৃতিকর্মীসহ সাধারণ মানুষজন।

সংস্কৃতিকর্মী রেজাউল করিম জীবন বলেন, সারাদিন কর্মব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যার পর টাউন হল চত্বরে এসে সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিই। কিন্তু মশার অত্যাচারে কোথাও দাঁড়িয়ে বা বসে কথা বলা যায় না। মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা কাজে আসছে না। মশাতো মরেই না, উপরোন্ত দিন দিন বাড়ছে।

শিক্ষার্থী সাফওয়ান বলেন, দিনের বেলা পড়তে বসলেও মশার কামড়ে থাকা যায় না। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই মশার উপদ্রব। গত বছর করোনার সময় বিভিন্ন ড্রেনে স্প্রে করা চোখে পড়লেও এখন পর্যন্ত আর দেখা যায়নি।

নগরীর কামারপাড়ার গৃহীণি কোহিনূর বেগম কলেন, মশা মারতে কয়েল, স্প্রে, বৈদ্যুতিক ব্যাট সবই কিনেছি। কিন্তু কিছুতেই মশার কামড় থেকে নিস্তার পাচ্ছি না। রান্নাঘরে কাজ করতে গেলেও মশা পিছু ছাড়ে না।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সহকারী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (অঞ্চল-৩) শাহিনুর রহমান বলেন, কেবল ফগার মেশিনের ধোঁয়া দিয়ে মশা নিধন পুরোপুরি হয় না। সিটি মেয়রের নির্দেশে এবার হ্যান্ড স্প্রের সাহায্যে কীটনাশক ছিটিয়ে আধাঘণ্টা বা এক ঘণ্টা পর ফগার মেশিনের ধোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ঝোঁপঝাড় ছাড়া প্রায় ৫০ শতাংশ মশা নিধন হয়।

তিনি আরও বলেন, ১০টি ফগার মেশিন দিয়ে প্রতি ওয়ার্ডে ৬ দিন করে বিভিন্ন ড্রেন ও ঝোঁপঝাড়ে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আরও ৬টি ফগার মেশিন ক্রয়ের প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। আরও দুই মাস মশার উপদ্রব থাকবে। এ সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালানো হবে।

এডিস মশার বিস্তার রোধে সিটি কর্পোরশেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর প্রস্তাবনার কথাও জানান শাহিনুর রহমান।

জিতু কবীর/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।