স্বস্তি ফেরেনি চাল-মুরগি-তেলে
রংপুরের বাজারগুলোতে কয়েক সপ্তাহ থেকেই অস্থির হয়ে উঠেছে মুরগির বাজার। চাল ও ভোজ্যতেলের মতোই মুরগির দামেও অস্বস্তি বিরাজ করছে। দাম বাড়ার ফলে মুরগি এখন অনেকটাই নিম্নআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।
শুক্রবার (১২) মার্চ ও শনিবার (১৩ মার্চ) নগরীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, যা একমাস আগে ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকার মধ্যে। ব্রয়লার মুরগির মতোই বাড়তি দাম রয়েছে অন্যান্য জাতের মুরগিতেও।
পাকিস্তানি কক কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮০-৩০০ টাকা। আর দেশি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১০ থেকে ২০টাকা টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিটি বাজার, স্টেশন বাজার ও কামাল কাছনা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মুরগির সরবরাহ কম থাকায় দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন কিছুটা বাড়ছে। বাজারে আমদানি বাড়লে দাম কমে আসবে। তবে বিভিন্ন জাতের চালের দাম সামান্য কমে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভোজ্যতেল গত সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে।
নগরীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে- মিনিকেট, নাজিরশাইল, বিআর-২৮ ও ২৯ গত সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি দুই থেকে পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট কেজি প্রতি ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬২-৬৫ টাকা। নাজিরশাইল কিছুটা কমে কেজি প্রতি ৬৪-৬৬ টাকায় হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৬-৬৯ টাকা। বি-আর২৮ চাল কেজি প্রতি ৫০-৫২ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। কাটারিভোগ ৭০-৭২ টাকা থেকে নেমে কেজি প্রতি ৬৫-৬৬ টাকায় হয়েছে।
এছাড়া বি-আর ২৯ কেজি প্রতি ৪৮-৫০ টাকায় ও পাইজাম ৪৩-৪৪ টাকায় ও চিনিগুড়া ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান সিটি বাজারের ব্যবসায়ী সাজু মিয়া।
তিনি বলেন, ‘চালের দাম না কমায় ক্রেতা ও ভোক্তা উভয়েরই সমস্যা। মোকাম থেকে বেশি টাকায় চাল কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
এদিকে, খোলা আটা কেজি প্রতি ৩০ টাকা, ময়দা ৪০-৪৫ টাকা, চিনি ৬৮-৭০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৬৫-৭০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মসলার দাম গত সপ্তাহের মতোই অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া ভোজ্যতেলের খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৮-১৩০ টাকায় ও বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতিলিটার ১৩৫-১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী হাসান আলী।
অন্যদিকে, ফার্মের ডিম গত সপ্তাহের মতো প্রতি হালি ২৮-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি ও পাকিস্তানি মুরগির ডিম হালি প্রতি ৫ টাকা কমে ৬০ ও ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে সবজির।
সিটি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী শাহীনূর জানান, প্রতি কেজি কার্টিনাল আলু ১৪-১৬ টাকা, শিল আলু ২০ টাকা, ঝাউ আলু ১৬-২০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, আদা ৬০-১২০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, ফুলকপি ১২ টাকা, বাঁধাকপি ৭-৮ টাকা, শিম ২০-২৫ টাকা, বেগুন ২০-২৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, কাঁচকলা প্রতি হালি ২০-৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ১২-১৬ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, বরবটি ৬৫ টাকা, ঢেঁড়স ৬৫-৭০ টাকা, সজিনা ডাটা ১০০-১২০ টাকা, টমেটো ১০-২০ টাকা, গাজর ২০ টাকা, শসা ১০ টাকা, মটরশুঁটি ২০-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড় প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা দরে।
তবে মাছের বাজারে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান মাছ ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, প্রতি কেজি চিংড়ি ৫৬০-৫৮০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৩০-২৮০ টাকা, ইলিশ (আকারভেদে) ৩৫০-১০০০ টাকা, কাতল ২০০ টাকা, পাবদা ২৫০-৩০০ টাকা, দেশি মাগুর ৪৫০টাকা, শিং (আকারভেদে) ৪০০-৬০০ টাকা, শৈল ৩০০-৩৬০ টাকা, ফলি ২০০ টাকা, গচি ৪৮০-৫০০ টাকা, সরপুঁটি ১৬০ টাকা, পাঙাশ ১২০ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ টাকা, ব্রিগেড ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, চিতল ৪০০ টাকা, বোয়াল (আকারভেদে) ৪০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জীতু কবির/এসজে/জিকেএস