মহাসড়কে অটো চলতে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে ওসির ‘ঘুষ’ দাবি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ পিএম, ১১ মার্চ ২০২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন জেলার সরাইল উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছা. রোকেয়া বেগম।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে উপজেলা পরিষদে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হাইওয়ে ওসির বিরুদ্ধে তিনি এই অভিযোগ আনেন ।

এসময় আওয়ামী লীগ নেত্রী ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড় মোড়ে অবস্থিত খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেনের ঘুষ বাণিজ্য ও বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে এখানকার সিএনজি অটোরিকশা চালক ও মালিকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার একটি সিএনজি অটোরিকশা আছে, এটির রেজিস্ট্রেশন ও কাগজপত্র আমার নামে। কাগজপত্র থাকার পরও আমার গাড়ি সিএনজি পাম্পে গ্যাস নিতে গেলে পুলিশ এটিকে আটক করে। আমি খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় গিয়ে ওসি সাহেবকে সিএনজি অটোরিকশাটি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।’

‘তখন তিনি (ওসি) আমাকে জানান, প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা দিলে সিএনজি অটোরিকশাটি মহাসড়কে চলাচলে পুলিশ আর ডিস্টার্ব করবে না। নাহলে পুলিশ বারবার সিএনজি অটোরিকশা আটকে থানায় আনবে এবং প্রতিবার জরিমানা গুনতে হবে। এই বলে ওসি সাখাওয়াত হোসেন আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা-ঘুষ দাবি করেন। এসময় আমার সঙ্গে ওসির টেবিলে সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।’

রোকেয়া বেগম বলেন, ‘প্রকাশ্যে একজন ওসির চাঁদা দাবির বিষয়টি আমাকে মর্মাহত করেছে। তখন আমি আমার পরিচয় ওসির কাছে প্রকাশ করি এবং নিজেকে উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেও পরিচয় দেই। তখন ওসি সাখাওয়াত হোসেন দম্ভোক্তির সাথে আমাকে পাল্টা জবাব দেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মাননীয় মন্ত্রী উনার (ওসি) বন্ধু। মহিউদ্দিন খান আলমগীর উনার বন্ধু, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরে উনার শ্যালক, মামা, ভাইসহ আত্মীয় অনেকে চাকরি করেন।’

ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম বলেন, ‘ওসি সাখাওয়াত হোসেন এই বেপরোয়া আচরণ ও কথাবার্তা ব্যবহার করে এখানে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। আমি এই ওসির অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সিএনজি অটোরিকশার সাথে আপোষ নেই। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। সিএনজি অটোরিকশা ডাম্পিং হলেই আইনি ব্যবস্থা। ওই সিএনজি অটোরিকশায় ভাইস চেয়ারম্যানের নাম লেখা নেই। পুলিশ আটক করেছে, মামলা দিয়ে উনার (রোকেয়া বেগম) হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি কোনো ঘুষ ও চাঁদা চাইনি। এসবের সঙ্গে আমার কোনো দহরম-মহরম নেই। আমি নতুন নই, বহু পুরাতন ওসি। আমি সবই বুঝি।’

‘মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বন্ধু, সরকারের বিভিন্ন দফতরে আত্মীয় স্বজন রয়েছে’—এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এটা ব্যক্তিগত ও বংশগত পরিচয়। একজনের সঙ্গে আরেকজনের ব্যক্তিগত পরিচয়-সম্পর্ক থাকতেই পারে। এইটার সঙ্গে সেইটার কোনো যোগসূত্র নেই।’

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।