আত্রাইয়ে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২১
ছবি: আব্বাস আলী

গ্রাম বাঙলার সাংস্কৃতির অন্যতম উপাদান হলো লাঠিখেলা। তবে গ্রামীণ সংস্কৃতির ধারক এই খেলা আজ বিলুপ্তির পথে। তারপরও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই খেলাটি।

বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) বিকেলে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মারিয়া গ্রামে লাঠি খেলার আসর বসে। খেলা দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু-নারী-পুরুষ-বৃদ্ধসহ হাজারো দর্শক আসেন।

একসময় গ্রাম বাঙলার এ খেলাগুলো মানুষের বিনোদনের খোরাক জোগাত। কিন্তু কালের বির্বতনে মানুষ ভুলতে বসেছে এই খেলা। লাঠিখেলায় মূলত ঢোল আর লাঠির তালে তালে খেলা করা হয়।

বাহারি ধরনের পোশাকে লাঠিয়ালরা নেচে-গেয়ে নানা শারীরিক কসরত প্রদর্শন করেন। প্রতিপক্ষের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের চেষ্টায় ঢোলের শব্দে খেলায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে।

jagonews24

খেলাটি এক ধরনের মার্শাল আর্ট। অনুশীলনকারীকে লাঠিয়াল বলা হয়। প্রত্যেক খেলোয়ার নিজ নিজ লাঠি দিয়ে রণকৌশল প্রদর্শন করেন।

আত্রাইয়ের মারিয়া গ্রামে রাতোয়াল, দিঘা ও বাগমারাসহ তিনটি লাঠিখেলার দল এ খেলায় অংশগ্রহণ করে।

প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই গ্রামীণ খেলা নতুন প্রজন্মের কাছ তুলে ধরতেই এমন আয়োজন। মেলা উপলক্ষে এলাকার জামাই-মেয়েসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের দাওয়াত করে আনা হয়।

খেলায় অংশ নেয়া লাঠিয়ালরা জানান, বংশ পরম্পরায় এই ঐহিত্যবাহী খেলা শিখেছেন। বাবার কাছ থেকেই লাঠিখেলার হাতেখড়ি। এই খেলা তার পরবর্তী প্রজন্মদেরও শিখিয়েছেন। তবে লাঠিখেলা এখন আর তেমন হয় না। খেলোয়াড়রা এখন অন্যান্য পেশা বেছে নিয়েছেন।

jagonews24

মারিয়া গ্রামের পল্লী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক এস এম হাসান সেন্টু বলেন, গ্রামবাঙলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাটি হারিয়ে যাচ্ছে। গত আটবছর থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় এবং মানুষকে বিনোদন দিতে প্রতিবছর খেলাটির আয়োজন করা হচ্ছে। সুষ্ঠু বিনোদন ফিরিয়ে আনতে গ্রামে একটি মাঠের প্রয়োজন।

নওগাঁ-৬ (রানীনগর-আত্রাই) আসনের সাংসদ আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, লাঠি খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয়। গ্রামীণ খেলাগুলো ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি।

আব্বাস আলী/এসএমএম/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।