জামিন জালিয়াতি : ১৪ আসামি কারাগারে
ভুয়া আগাম জামিননামা তৈরির ঘটনায় ১৪ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (০৩ মার্চ) বিকেলে বগুড়ার আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেন তারা।
বগুড়ার যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনকে গ্রেফতারে হাইকোর্টের নির্দেশ দেয়ার এক সপ্তাহ পর তারা আত্মসমর্পণ করেন।
বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আসমা মাহমুদ এই আদেশ দেন। বগুড়ার কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জী এই তথ্য বুধবার রাতে নিশ্চিত করেন।
কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন- বগুড়া সদরের গোদারপাড়া এলাকার লিটন প্রামাণিক, মোহাম্মদ মানিক, মোহাম্মদ জাকির, মোহাম্মদ তানভির, মোহাম্মদ আবদুল গনি, রাসেল মণ্ডল, আসাদুজ্জামান মনা, খোকন, শিপন, আল আমিন, দীপ্ত, মিরাজ, হেলাল ও রাব্বী।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে বগুড়া পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম ছাড়াও আবদুল আলিম, আনোয়ার মণ্ডল, মোহাম্মদ বাদল, সেলিম, কিবরিয়া, রাশেদুল, সাদ্দাম, মাহমুদ, রতন, সেলিম রেজা, রুহুল আমিন, জাহিদুর রহমান, নুর আলম মণ্ডল, বিপুল ও সুমন প্রামাণিক এখনো পলাতক রয়েছেন।
কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জী বলেন, বুধবার আদালতে ১৪ আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়।
এরমধ্যে একটিতে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোট ভাই মশিউল আলম দীপন বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আমিনুর ইসলামকে প্রধান করে ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৩৩ আসামির মধ্যে ৩০ জনের জামিননামার ভুয়া নথি তৈরি করা হয়েছিল।
ভুয়া জামিননামার বিষয়টি ২৪ ফেব্রুয়ারি ধরা পড়ার পরপরই হাইকোর্টের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতিকে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চ আসামিদের গ্রেফতারের আদেশ দেন।
সাতদিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়া হয়। বিষয়টি তদন্ত করতে বগুড়ার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে নির্দেশও দেন আদালত।
এরপর পরই আত্মগোপনে চলে যান সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুর ইসলামসহ ৩০ জন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, জামিন জালিয়াতি-সংক্রান্ত কোনো নথি এখনও আমাদের হাতে আসেনি।
মামলার বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের বেঞ্চের উল্লেখ করে ১৪ ফেব্রুয়ারি জামিন পাওয়ার দাবি করেন বগুড়ার যুবলীগ নেতা আমিনুর ইসলামসহ ৩০ আসামি। তবে ওই দিন এই আদালত থেকে এমন কোনো আদেশ হয়নি। এমনকি সেখানে যেসব আইনজীবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাও ছিল মিথ্যা।
এসএমএম/এমকেএইচ