চুয়াডাঙ্গায় কৃত্রিম মরুভূমিতে বেড়ে উঠছে দুম্বা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ১০:৪৮ এএম, ০২ মার্চ ২০২১

চুয়াডাঙ্গায় বেড়ে উঠছে মরুর প্রাণী দুম্বা। সাধারণত সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে যার বেশি বসবাস সেই দুম্বার খামার গড়ে তোলা হয়েছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায়। ছোট্ট কৃত্রিম মরুভূমি তৈরি করে লালন-পালন করা হচ্ছে এসব দুম্বা। এলাকার আওহাওয়া দুম্বা পালনে অনুকূল হওয়ায় দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।

ঢাকার সাদেক এগ্রো থেকে আয়োশি ও রেড মাসাই জাতের ৬টি দুম্বা কিনে এনে ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে লালন-পালন শুরু করে ওয়েভ ফাউন্ডেশন পরিচালিত খামার। দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা গ্রামে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে অবস্থিত এই খামারে দুম্বা ছাড়াও বিভিন্ন পশুপাখি লালন-পালন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

একটি পুরুষ এবং ৫টি নারী দুম্বায় মোট খরচ পড়ে ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে ৪টি দুম্বা শাবক। সুস্থভাবেই দিনদিন বেড়ে উঠছে এসব শাবক। সবুজ ঘাস, খড়, গম, ভুট্টা, ছোলা, গাছের পাতা খেয়েই প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠছে দুম্বাগুলো।

এ খামারের সহায়ক মনোয়ার হোসেন বলেন, দুম্বা মরুভূমি পছন্দ করে। তাই এখানে ছোট্ট পরিসরে কৃত্রিম মরুভূমি তৈরি করে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে নারী দুম্বাগুলো ৪টি বাচ্চা দিয়েছে। সুস্থভাবে বেড়ে উঠেছে তারা। মোট দুম্বার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০টি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

গমের ভূষি, চালের কুড়া, ভুট্টা ভাঙা, সরিষার খৈল, চিটাগুড়, খড়, মাল্টিভিটামিনসহ বিভিন্ন খাদ্য একত্রে মিশিয়ে তাদের তিন বেলা খাবার দেয়া হয়। এছাড়াও সবুজ ঘাস, কাঁঠাল পাতা তাদের পছন্দ। ছাগল ভেড়ার মতোই লালন-পালন করা হয় এ সকল দুম্বা।

jagonews24

এ খামারের সহকারী সমন্বয়কারী ডা. তুহিন মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় দুম্বার খামার নতুন। তবে দেশের অন্যান্য স্থানে কমবেশি যারাই দুম্বা পালন করছেন, কেউই লোকসানে নেই। কারণ ছাগল ভেড়ার মতোই দুম্বা লালন-পালন করা যায়। বংশও বৃদ্ধি করে ছাগল ভেড়ার মতোই। আবহাওয়া, খাবার, চিকিৎসাতেও কোনো সমস্যা নেই।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, একটু সতর্ক থাকলেই এদের ঠান্ডা লাগা রোগ এড়ানো সম্ভব। তিন থেকে চার বছরে পরিণত হয় একটি পূর্ণবয়স্ক দুম্বা। তখন ওজন হয় ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত। দাম হতে পারে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। কোরবানির সময় এর প্রচুর চাহিদা থাকে।

দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, দুম্বা ও ভেড়া কাছাকাছি প্রাণী। দুম্বা মরুর প্রাণী হলেও এটি একটি সহনশীল প্রাণী। দেখতে ভেড়ার মতো তবে পেছনের অংশ ভারি। ভেড়ার মতোই দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। মাংস উৎপাদনে এরা ছাগল ভেড়ার চেয়ে এগিয়ে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ছাগল ভেড়ার চেয়ে দুম্বা পালন লাভজনক। কোরবানির সময় এদের প্রচুর চাহিদা থাকে। আমাদের এই পরিবেশে দুম্বা পালনে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না, তাই এই খাতে দেখা দিয়েছে নতুন সম্ভাবনা।

এ দুম্বা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝেও রয়েছে নানা কৌতুহল। দেশে কোরবানিকৃত দুম্বার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। দেশে দুম্বা উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে আমদানি কমবে এবং সহজলভ্যও হবে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন

তবে এজন্য প্রয়োজন সরকারি সহায়তা। সরকারিভাবে ব্যাংক ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা পেলে দুম্বা পালন বেকার জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।

সালাউদ্দীন কাজল/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।