সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ : হবিগঞ্জে কৃষক লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
সরকারি সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলা কৃষক লীগ সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা করেছে স্থানীয় ভূমি অফিস। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা দিদার হোসেন সম্প্রতি বানিয়াচঙ থানায় মামলাটি করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৮-৮৯ সালে উপজেলার সুলতানপুর মৌজার ১৮ একর ৮৮ শতাংশ জমি ১৭ জন ভূমিহীনের নামে বন্দোবস্ত দেয় সরকার। কিন্তু তাদের সরিয়ে ওই জমি দখল করেন হুমায়ুন কবীর রেজা। সরকারি অনুমতি না নিয়েই তিনি দখল করা জমির গাছ কেটে ও মাছ বিক্রি করে অর্থ লোপাট করে আসছিলেন। সরকারি জমি দখল করে তিনি ফসলের ক্ষেতও তৈরি করেন। দখল টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে ওই জমিতে তিনি মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ করেন।
অভিযোগের বিবরণীতে বলা হয়, সরকারি বনায়নের ৫০টি গাছ বিক্রি করে দুই লাখ টাকা এবং সরকারি জমিতে ৫ ফুট গর্ত করে মাটি বিক্রি করে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিশাল পুকুর খনন করে তিনি মাছ চাষ করেন। ১০ বছরে সেখান থেকে দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি করা হয়। এছাড়া, সরকারি ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও বনায়ন ধ্বংস করে অপূরণীয় ক্ষতিসাধন করেন হুমায়ুন কবীর।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমিহীন পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে গত ২১ ডিসেম্বর বানিয়াচঙয়ের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পায় স্থানীয় ভূমি অফিস।
এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। ১০ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীর রেজার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। এরপরই তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, ‘হুমায়ূন কবীর রেজা ভূমিহীনদের জায়গা দখল করে বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন। স্থানীয় ভূমিহীনদের অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মামলা দায়ের করা হয়।’
তবে জেলা কৃষক লীগ সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজার দাবি, ‘এসব অভিযোগ ভুয়া। দরখাস্তে অভিযোগকারীর নাম আছে। কিন্তু ঠিকানা নেই। এটি নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও আছে। তদন্ত হয়েছে। তদন্তে তারা যা পেয়েছেন তাই দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘জমির মালিক ভূমিহীনরাই আছে। আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি সাজানো। একতরফাভাবে করা হয়েছে। আমার কোনো কথা শোনা হয়নি। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এটি করিয়েছে।’
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসএস/এমএস