ড্রেজার মাস্টারকে মারপিট : ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
বাগেরহাটের মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌরুটে খনন কাজে ড্রেজার মাস্টারকে মারপিটের ঘটনায় আটক দুজনকে বুধবার দুপুরে দ্রুত বিচার আইনে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আটকরা হলেন, রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুল।
মঙ্গলবার সকালে রামপালের পুরাতন ঘাট এলাকায় ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত বিআইডব্লিটিএ এর ড্রেজার মাস্টার মো. শাহাজানকে তুচ্ছ ঘটনায় চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডার বাহিনী মারপিট করে আহত করে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রধিকার প্রকল্পের খনন কাজের ড্রেজার মাস্টারকে মারপিটের প্রতিবাদে ওই চ্যানেলে ডেজিংয়ের কাজে নিয়োজিত থাকা ৯টি ড্রেজারের ড্রেজিং মাস্টারসহ কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে দিলে টনক নড়ে প্রশাসনের।
ঘটনার পর বিআইডব্লিটিএর চেয়ারম্যান কমডোর মোজাম্মেল হককে বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হলে তিনি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সালাম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেয়ে তিনি বাগেরহাট জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে আওয়ামী লীগের এ নেতাকে আটকের নির্দেশ দেন।
পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ চেয়ারম্যান বাবুলকে আটক করে। এরপর পুলিশ পাহারায় ওই চ্যানেলে খনন কাজে থাকা বিআইডব্লিটিএর ৯টি ড্রেজার আবারও খনন কাজ শুরু করে। ওইদিন রাতে ড্রেজার মাস্টার মো. শাহাজান বাদী হয়ে আটক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুলের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে রামপাল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপর পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলকে বাগেরহাটে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলকে আদালতে নেয়া করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রামপাল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার রাতে বাদীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। আসামি রফিকুল ইসলাম বাবুলকে পুলিশ প্রহরায় রাতেই বাগেরহাটে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া রামপালের আলোচিত এ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষকসহ এলাকার সাধারণ মানুষদের মারপিট করার অনেক অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে কথা বলতে সাহস পান না। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মারপিটসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো, গত বছরের ৯ জুলাই ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলাকালে তথ্য সংগ্রহকারী রামপাল উপজেলার বড়কাঠালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেগম খাদিজা ইয়াসমিন ও তার স্বামী রবিউল আলমকে মারপিট করে আহত করে। এ ঘটনার পরদিন স্কুল শিক্ষকের স্বামী বাবুলের বিরুদ্ধে রামপাল থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার না করলে ভোটার তথ্য সংগ্রহকারীকে মারপিটের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর গত বছরের ১৭ নভেম্বর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। ওই মামলায় আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
শওকত আলী বাবু/এমজেড/পিআর