বগুড়ায় মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ০২:২৪ পিএম, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বগুড়া জেলা মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকারি দলের দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে পুলিশ সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও শটগানের গুলি ছুড়েছে।

মঙ্গলবার (৯ ফেবরুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বগুড়ার চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে এই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বগুড়া জেলা মোটরমালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরকার দলীয় দু’দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

jagonews24

অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে মালিক গ্রুপের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে মোটরমালিক গ্রুপের অফিস ও মালামাল তার হেফাজতে চারমাথা বাসটার্মিনাল এলাকায় রাখেন।

মঙ্গলবার মোটরমালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের নেতৃত্বে চারমাথা এলাকায় গিয়ে আমিনুলের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটরমালিক গ্রুপের অফিস দখলের ঘোষণা দিয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এ খবর পেয়ে যুবলীগ নেতা আমিনুলের লোকজন চারমাথা এলাকায় সমবেত হন।

তারা যেকোনো মূল্যে মোহন গ্রুপকে প্রতিহত করার জন্য মাইকে ঘোষণা দেন এবং পরিবহন শ্রমিকদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি নিয়ে অবস্থান নিতে বলেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ ও সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে পুলিশ চারমাথায় অবস্থান নেয়।

jagonews24

এরই মধ্যে আমিনুল গ্রুপের লোকজন পুলিশের সামনেই লাঠি মিছিল শুরু করে। এ সময় মোহন গ্রুপের একদল নেতাকর্মী সান্তাহার সড়ক দিয়ে এলজিইডির সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে থাকাকালে মোহন গ্রুপের লোকজন লাঠিশোটা নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙে আমিনুল গ্রুপের লোকজনকে ধাওয়া করে। ধাওয়ায় তারা পালিয়ে গেলে মোহন গ্রুপের লোকজন টার্মিনাল এলাকা দখলে নিয়ে শুরু করে ব্যাপক ভাঙচুর।

তারা এলোপাতাড়ি যানবাহন ভাঙচুর ছাড়াও আমিনুলে নিয়ন্ত্রণে থাকা মোটর মালিক গ্রুপের অফিস ও তার ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী চলে এই তাণ্ডব।

jagonews24

এ সময় ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপার্সন রাজু আহম্মেদকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও শটগানের গুলি ছোড়ে।

তাছাড়াও পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার কনস্টেবল রমজান আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশ রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছুড়ে মোহন গ্রুপের লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

jagonews24

এ সময় পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষের কারণে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার পর আমিনুল গ্রুপ চারমাথা এলাকায় অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকেও ফিরিয়ে দেয়। সংঘর্ষের পর চারমাথা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ ফয়সাল মাহমুদ বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।