চরমপন্থী গ্রুপের প্রধান দাবি করে চাঁদা দাবি, ধরা পড়ল দুধ বিক্রেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০৫:২৪ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

চরমপন্থী গ্রুপ পাঁচ বাহিনীর (০০.৫) নামে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চেয়ে চিঠি দেয়ার ঘটনায় রাসেল হাওলাদার (৩৫) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়াারি) দুপুরে উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটক রাসেল হাওলাদার দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের মোসলেম হাওলাদারের ছেলে। পেশায় তিনি দুধ বিক্রেতা। চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীকে পাঠানো চিঠিতে রাসেল হাওলাদার নিজেকে ‘চরমপন্থী গ্রুপ লাল বাহিনীর প্রধান’ বলে দাবি করেন।

এর আগে ২৯ জানুয়ারি উপজেলা শহরের গৈলা বাজারে ‘ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডার’র মালিক ও মধ্য শিহিপাশা গ্রামের মৃত কৃষ্ণকান্ত ঘোষের ছেলে পরিমল ঘোষের কাছে চিঠি দিয়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন আগৈলঝাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পরিমল ঘোষ। ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলামকে।

অভিযোগে পরিমল ঘোষ উল্লেখ করেন, ২৯ জানুয়ারি রাতে একটি খামে করে তার স্ত্রী শনিতা ঘোষের কাছে এক যুবক একটি চিঠি পৌঁছে দেন। বাড়ি ফিরে তিনি খাম খুলে দেখতে পান চিঠিতে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় তার পরিবারের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছে।

এতে আরও লেখা ছিল, ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে টাকা জোগাড় করে একটি মিষ্টির প্যাকেটে করে তার গোয়ালঘরে রেখে দিতে হবে। থানা পুলিশ, নেতা, আমলা কেউ তার নিরাপত্তা দিতে পারবে না।

দাবি করা ৩ লাখ টাকা দিলে আগামী ১০ বছরে তিনি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার কোনো ক্ষতি হবে না বলে চিঠিতে আশ্বস্ত করা হয়। তবে এক টাকাও কম দিলে ওই টাকা ফেরত পাঠানো হবে। সেক্ষেত্রে তার পরিবার ক্ষতির মুখে পড়বে বলে চিঠিতে হুমকি দেয়া হয়।

jagonews24

চিঠির প্রেরকের ঠিকানায় পাঁচ বাহিনীর (০০.৫) নাম লেখা রয়েছে। চিঠির মধ্যে প্রেরণকারী নিজেকে ‘চরমপন্থী গ্রুপ লাল বাহিনীর প্রধান’ বলে দাবি করেছেন। ২৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়িতে পরিমল ঘোষের স্ত্রী একা ছিলেন। এসময় মাস্ক ও কানটুপি পরা এক ব্যক্তি বাড়ির ভেতরে ঢুকে ওই চিঠি দিয়ে যান।

আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর চিঠির প্রেরককে শনাক্তের জন্য তদন্ত শুরু করা হয়। আগৈলঝাড়ায় চরমপন্থী গ্রুপ পাঁচ বাহিনী বা লাল বাহিনীর অস্তিত্ব না থাকায় পরিমল ঘোষের আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল হাওলাদারের কথাবার্তা ছিল অসংলগ্ন। ঘটনার পর তার আচরণও ছিল সন্দেহজনক। আজ দুপুরে রাসেল হাওলাদারকে আটক করে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে জেরার মুখে রাসেল হাওলাদার চাঁদা দাবি করে চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করেন।

রাসেল হাওলাদার জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তার অনেক ধারদেনা হয়েছিল। সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে রবিউল ইসলাম হাওলাদার (২০) নামের তার এক সহযোগীকে দিয়ে পরিমল ঘোষের বাড়িতে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

রাসেল আরও বলেন, পরিমল ঘোষের ছেলে মেয়ে ঢাকায় থাকেন। তার কাছে চাঁদা দাবি করলে সহজেই তা পাওয়া যাবে এবং বিষয়টি গোপন থাকবে বলে ধারণা করছিলেন।

পরিদর্শক মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, রাসেল ও তার সহযোগী রবিউলকে আসামি করে মামলা হয়েছে। পলাতক রবিউলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সাইফ আমীন/এসআর/এএসএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।