শীতে কাবু পঞ্চগড়, দুর্ভোগে খেটে খাওয়া মানুষ
শীতের জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা আরও কমেছে। অব্যাহত রয়েছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। রোববার (৩১ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫।
সপ্তাহজুড়ে তেঁতুলিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি পর্যায়ের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিলেছে এবং ঝলমলে রোদ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।
শীতের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার প্রায় দুই লাখ খেটে খাওয়া মানুষ। আয় কমে গেছে অটোবাইক আর রিকশাভ্যান চালকদের। সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ডায়রিয়াসহ শীতকালীন ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, মধ্য মাঘের পর পঞ্চগড়সহ উত্তরের জেলাগুলোতে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে তীব্র হয়েছে শীত পরিস্থিতি। রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। সোমবার সকালে সর্বনিম্ন আরও কমে হয় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কনকনে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকায় খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে শীতার্তদের। তীব্র শীতে কাজে যেতে না পারায় কষ্টে দিনাতিপাত করছে শ্রমজীবি ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, সোমবার সকালে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এই অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। এ অবস্থা আরও দুই তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন ডা. ফজলুর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলে টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলায় শীতজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোববার শুধু ডায়েরিয়া নিয়ে ৩০ শিশু পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
পঞ্চগড় পৌরসভা নবনির্বাচিত মেয়র জাকিয়া খাতুন বলেন, পঞ্চগড় একটি শীতপ্রবণ এলাকা। আমি রোববার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। শীতের শুরু থেকেই বিভিন্ন এলাকায় দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিলি করেছি। এখন মেয়র হিসেবে দ্রুত শীতবস্ত্র নিয়ে শীতার্তদের পাশে দাঁড়াবো।
জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার শীতার্তের মাঝে শীতের কম্বল ও সোয়েটার বিলি করা হয়েছে। এছাড়া সরকারিভাবে প্রাপ্ত ৩৬ লাখ টাকা বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বণ্টন করা হয়েছে। তারা প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে শীতের কম্বল কিনে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করেছেন। এর বাইরে বেসরকারিভাবে ব্যাক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
সফিকুল আলম/এসএমএম/এমএস